সূরা-আন-নিসা বাংলা (আয়াত ৭৭-৯০)
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ قِيلَ لَهُمْ كُفُّوا أَيْدِيَكُمْ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ فَلَمَّا كُتِبَ عَلَيْهِمُ الْقِتَالُ إِذَا فَرِيقٌ مِّنْهُمْ يَخْشَوْنَ النَّاسَ كَخَشْيَةِ اللَّهِ أَوْ أَشَدَّ خَشْيَةً ۚ وَقَالُوا رَبَّنَا لِمَ كَتَبْتَ عَلَيْنَا الْقِتَالَ لَوْلَا أَخَّرْتَنَا إِلَىٰ أَجَلٍ قَرِيبٍ ۗ قُلْ مَتَاعُ الدُّنْيَا قَلِيلٌ وَالْآخِرَةُ خَيْرٌ لِّمَنِ اتَّقَىٰ وَلَا تُظْلَمُونَ فَتِيلًا
বাংলা অর্থ:
৭৭। তুমি কি তাহাদিগকে লক্ষ্য কর নাই ! যাহাদের বলা হইয়াছিল যে, স্বীয় হাতসমূহকে বিরত রাখ এবং নামাযের পাবন্দী কর এবং যাকাত প্রদান করিতে থাক, অনন্তর যখন তাহাদের প্রতি জেহাদ ফরয করিয়া দেওয়া হইল, তখন ঘটনা এই দাঁড়াইল যে, তাহাদের মধ্য হইতে কেহ কেহ মানুষকে এইরূপ ভয় করিতে লাগিল যেরূপ আল্লাহ্কে ভয় করে বরং তদপেক্ষাও অধিক, এবং এইরূপ বলিতে লাগিল, হে আমাদের রব্ব ! আপনি আমাদের উপর জেহাদ কেন ফরয করিয়া দিলেন? আমাদিগকে যদি আরও কিছু সময় অবকাশ দিতেন; আপনি বলিয়া দিন, পার্থিক ভোগ-বিলাস কেবল কয়েক দিনের জন্য, আর পরকাল ঐ ব্যক্তির জন্য সর্বদিক দিয়া উত্তম, যে আল্লাহর বিরোধিতা হইতে বাঁচিয়া থাকে। এবং তোমাদের প্রতি সূত্র-পরিমাণও জুলুম করা হইবে না।
أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِككُّمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنتُمْ فِي بُرُوجٍ مُّشَيَّدَةٍ ۗ وَإِن تُصِبْهُمْ حَسَنَةٌ يَقُولُوا هَـٰذِهِ مِنْ عِندِ اللَّهِ ۖ وَإِن تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ يَقُولُوا هَـٰذِهِ مِنْ عِندِكَ ۚ قُلْ كُلٌّ مِّنْ عِندِ اللَّهِ ۖ فَمَالِ هَـٰؤُلَاءِ الْقَوْمِ لَا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ حَدِيثًا
বাংলা অর্থ:
৭৮। তোমরা যেখানেই থাক, সেখানেই তোমাদের মৃত্যু আসিবে, যদিও তোমরা সুদৃঢ় দুর্গের মধ্যেই থাক না কেন; আর যদি তাহাদের (মুনাফেকদের) কোন ভাল অবস্থা উপস্থিত হয়, তবে বলে, ইহা আল্লাহর পক্ষ হইতে হইয়াছে, আর যদি তাহাদের কোন মন্দ অবস্থা উপস্থিত হয়, তবে বলে, ইহা আপনার দরুন হইয়াছে; আপনি বলিয়া দিন, সমস্ত আল্লাহর পক্ষ হইতেই হয়; তবে এসমস্ত লোকের কি হইয়াছে যে, কথা বুঝিবার কাছেও যায় না।
সূরা-আন-নিসা বাংলা (আয়াত ৭৭-৯০) শানে নুযূল
১) হিজরতের পূর্বে মক্কার কাফেরেরা মুসলমানদিগকে কষ্ট দিত। এই কারনে কোন কোন সাহাবী হুযূরের খেদমতে জিহাদের জন্য অনুমতি চাইতেন। হুযূর বলিতেন, এখনও জিহাদের অনুমতি আসে নাই; অতএব, ধৈর্য ধারণ কর। হিজরতের পর যখন জিহাদের আদেশ পৌঁছাল, তখন স্বভাবতঃ কাহারও কাহারও নিকট ইহা কঠিন বলিয়া মনে হইল।(বঃ কোঃ)
২) কেননা, কেহ কুফরীমূলক বিরোধিতা করিলে পারলৌকিক ভোগ বিলাস তো তাহার ভাগ্যে বিন্দুমাত্রও হইবে না। পক্ষান্তরে, ঈমানদার ব্যক্তি পাপাচারী হইলে মাত্র উচ্চস্তরের ভোগ বিলাস হইতে বঞ্চিত হইবে।(বঃ কোঃ)
৩) অর্থাৎ, যে পরিমাণ আমল করিবে, উহার সওয়াব পুরাপুরি পাইবে। অতএব, জিহাদের ন্যায় মহান কাজের অশেষ সওয়াব হইতে কেন বঞ্চিত থাকিতেছ।
مَّا أَصَابَكَ مِنْ حَسَنَةٍ فَمِنَ اللَّهِ ۖ وَمَا أَصَابَكَ مِن سَيِّئَةٍ فَمِن نَّفْسِكَ ۚ وَأَرْسَلْنَاكَ لِلنَّاسِ رَسُولًا ۚ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا
বাংলা অর্থ:
৭৯। হে মানব ! তোমাদের প্রতি যে-কোন মঙ্গল উপস্থিত হয়, উহা কেবল আল্লাহরই পক্ষ হইতে, আর যে-কোন অমঙ্গল উপস্থিত হয়, উহা তোমাদেরই (বদ্ আমলের) কারণে হইয়া থাকে; আর আমি আপনাকে সমস্ত মানুষের জন্য নবীরূপে প্রেরণ কারয়াছি; এবং আল্লাহ্ই যথেষ্ট সাক্ষী হিসাবে।
مَّن يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ ۖ وَمَن تَوَلَّىٰ فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا
বাংলা অর্থ:
৮০। যে-ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করিয়াছে সে তো খোদারই আনুগত্য করিল, আর যে-ব্যক্তি বিমুখ থাকে, তবে আমি তো আপনাকে তাহাদের প্রতি রক্ষকরূপে প্রেরণ করি নাই।
وَيَقُولُونَ طَاعَةٌ فَإِذَا بَرَزُوا مِنْ عِندِكَ بَيَّتَ طَائِفَةٌ مِّنْهُمْ غَيْرَ الَّذِي تَقُولُ ۖ وَاللَّهُ يَكْتُبُ مَا يُبَيِّتُونَ ۖ فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ ۚ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ وَكِيلًا
বাংলা অর্থ:
৮১। আর এসমস্ত লোক বলে, আমাদের কাজ আনুগত্য করা, অনন্তর যখন ইহারা চলিয়া যায় আপনার নিকট হইতে, তখন তাহাদের একদল রাত্রিকালে পরামর্শ করে উহার বিপরীত যাহাকিছু তাহারা মুখে বলিয়াছিল; আর আল্লাহ্ তা‘আলা লিপিবদ্ধ করিতেছেন যাহা তাহারা রাত্রিকালে পরামর্শ করিয়া থাকে, অতএব, আপনি ইহাদের প্রতি ভ্রূক্ষেপও করিবেন না এবং (সর্ববিষয়) আল্লাহর হাওয়ালা করুন; আর আল্লাহ্ তা‘আলাই যথেষ্ট-কার্য সম্পাদনে।
أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ ۚ وَلَوْ كَانَ مِنْ عِندِ غَيْرِ اللَّهِ لَوَجَدُوا فِيهِ اخْتِلَافًا كَثِيرًا
বাংলা অর্থ:
৮২। তবে কি তাহারা কোরআনে মনঃসংযোগ করে না? আর যদি ইহা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাহারও নিকট হইতে হইত, তবে ইহার মধ্যে তাহারা বহু বৈসাদৃশ্য পাইত।
সূরা-আন-নিসা বাংলা (আয়াত ৭৭-৯০) শানে নুযূল
১) মুনাফেকেরা কোন কৃতীত্ব স্বীকার করিত না। হুযূরের পরিচালনার ফলে যুদ্ধে জয়লাভ এবং গনীমতের মাল হস্তগত হইলে তাহারা বলিত ইহা আল্লাহর তরফ হইতে হইয়াছে। আর পরাজয় হইলে বলিত, হুযূরের ত্রুটিপূর্ণ পরিচালনার জন্য হইয়াছে। আল্লাহ্ বলেন, জয় পরাজয় সবই আল্লাহর পক্ষ হইতে হইয়া থাকে। পয়গম্বর আল্লাহর তরফ হইতে ইঙ্গিত পাইয়াই তদ্বীর করেন। কাজেই, উহাতে কোন ভুল হয় না। পরাজয়কে পরাজয় মনে করিও না। ইহা তোমাদেরই কর্মফল। আলোচ্য আয়াতে ইহাই বলা হইয়াছে। (মঃ কোঃ)
২) অর্থাৎ, মানুষকে কুফর হইতে ফিরাইয়া রাখা আপনার দায়িত্ব নহে। আপনার দায়িত্ব শুধু পয়গাম পৌঁছাইয়া দেওয়া। কেহ কেন কাফের হইল? এই কৈফিয়ৎ আপনার নিকট জিজ্ঞাসা করা হইবে না। এখানে হুযূরকে সান্তনা দেওয়া হইতেছে। (বঃ কোঃ)
وَإِذَا جَاءَهُمْ أَمْرٌ مِّنَ الْأَمْنِ أَوِ الْخَوْفِ أَذَاعُوا بِهِ ۖ وَلَوْ رَدُّوهُ إِلَى الرَّسُولِ وَإِلَىٰ أُولِي الْأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنبِطُونَهُ مِنْهُمْ ۗ وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لَاتَّبَعْتُمُ الشَّيْطَانَ إِلَّا قَلِيلًا
বাংলা অর্থ:
৮৩। আর যখন তাহাদের নিকট কোন বিষয়ের খবর পৌঁছে, তাহা নিরাপত্তার হউক বা ভয়েরই হউক, তবে উহা (তৎক্ষণাৎ) প্রচার করিয়া দেয়; আর যদি তাহারা উহাকে রাসূলের উপর এবং তাহাদের মধ্যে যাহারা এইরূপ বিষয় বুঝিতে সক্ষম তাহাদের উপর সমর্পণ করিত, তাহা হইলে ইহাকে তাহারা জানিয়াই লইত যাহারা ইহাদের মধ্যে সংবাদের সঠিক তথ্য অনুসন্ধান করিয়া লয়; আর যদি তোমাদের প্রতি আল্লাহ্ তা‘আলার অনুগ্রহ এবং তাঁহার রহমত না হইত, তবে তোমরা সকলেই শয়তানের অনুগামী হইতে অল্প কয়েকজন ব্যতীত।
فَقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفْسَكَ ۚ وَحَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ ۖ عَسَى اللَّهُ أَن يَكُفَّ بَأْسَ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ وَاللَّهُ أَشَدُّ بَأْسًا وَأَشَدُّ تَنكِيلًا
বাংলা অর্থ:
৮৪। অতএব, আপনি আল্লাহর পথে জেহাদ করুন ! আপনার প্রতি আপনার নিজের কর্ম ব্যতীত কোন আদেশ নাই এবং মুসলমানদিগকে উৎসাহিত করুন, আল্লাহ্ হইতে এই আশা যে, তিনি কাফেরদের সংগ্রাম-শক্তিকে প্রতিরোধ করিয়া দিবেন; আর আল্লাহ্ সংগ্রাম-শক্তিতে অধিক দৃঢ় এবং শাস্তি প্রদানেও অধিক কঠোর।
مَّن يَشْفَعْ شَفَاعَةً حَسَنَةً يَكُن لَّهُ نَصِيبٌ مِّنْهَا ۖ وَمَن يَشْفَعْ شَفَاعَةً سَيِّئَةً يَكُن لَّهُ كِفْلٌ مِّنْهَا ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ مُّقِيتًا
বাংলা অর্থ:
৮৫। যে ব্যক্তি সৎ সুফারিশ করিবে, সে ইহার দরুন (সওয়াবের) অংশ প্রাপ্ত হইবে; এবং যে-ব্যক্তি অসৎ সুফারিশ করিবে, সে ইহার দরুন (গুনাহর) অংশ প্রাপ্ত হইবে; বস্তুতঃ আল্লাহ্ তা‘আলা সকল বিষয়োপরি শক্তিমান।
وَإِذَا حُيِّيتُم بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوا بِأَحْسَنَ مِنْهَا أَوْ رُدُّوهَا ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ حَسِيبًا
বাংলা অর্থ:
৮৬। আর যখন কেহ তোমাদিগকে সালাম করে, তখন তোমরা তাহারা চেয়ে উৎকৃষ্ট বাক্যে সালাম (-এর উত্তর) কর অথবা সেই শব্দটাই (উত্তরে) বলিয়া দাও নিশ্চয়, আল্লাহ্ সকল বিষয়ের হিসাব লইবেন।
সূরা-আন-নিসা বাংলা (আয়াত ৭৭-৯০) শানে নুযূল
১) অর্থাৎ, যুদ্ধক্ষেত্র হইতে জয় কিংবা পরাজয়ের সংবাদ পৌঁছালে, প্রথমে হুযূর কিংবা তাঁহার প্রধান সাহাবীদের গোচরীভূত করা আবশ্যক। এতদ্ভিন্ন নিজের বিবেক দ্বারা কোন খবর সত্য বলিয়া জানিতে পারিলে, তাহা যাচাই না করিয়া তৎক্ষণাৎ প্রচার করিয়া দেওয়া উচিত নহে। কেননা, অনেক সময় মিথ্যা সংবাদও প্রচারিত হইয়া থাকে। (মুঃ কোঃ)
২) অর্থাৎ, দুর্বলমতি মুসলমানগণ কাফেরদের সহিত যুদ্ধ করিতে ভয় পাইতেছে। তবে কি তাহারা খোদার সঙ্গে যুদ্ধ করিবে? মোটকথা, খোদার হুকুম অমান্য করিলে তাঁহার কোপে পতিত হইতে হইবে। সুতরাং আল্লাহ্ তা‘আলার কোপে পতিত হওয়ার চেয়ে কাফেরদিগকে হত্যা করা এবং নিজে শহীদ হওয়াই তো সঙ্গত ও সহজ।(মুঃ কোঃ)
اللَّهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۚ لَيَجْمَعَنَّكُمْ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ ۗ وَمَنْ أَصْدَقُ مِنَ اللَّهِ حَدِيثًا
বাংলা অর্থ:
৮৭। আল্লাহ্ এইরূপ যে, তিনি ভিন্ন কেহই মা‘বূদ হওয়ার যোগ্য নহে; তিনি নিশ্চয়ই তোমাদিগকে একত্রিত করিবেন কিয়ামত দিবসে-ইহাতে কোন সন্দেহ নাই; আর আল্লাহ্ তা‘আলার চেয়ে কাহার কথা অধিক সত্য হইবে?
فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِينَ فِئَتَيْنِ وَاللَّهُ أَرْكَسَهُم بِمَا كَسَبُوا ۚ أَتُرِيدُونَ أَن تَهْدُوا مَنْ أَضَلَّ اللَّهُ ۖ وَمَن يُضْلِلِ اللَّهُ فَلَن تَجِدَ لَهُ سَبِيلًافَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِينَ فِئَتَيْنِ وَاللَّهُ أَرْكَسَهُم بِمَا كَسَبُوا ۚ أَتُرِيدُونَ أَن تَهْدُوا مَنْ أَضَلَّ اللَّهُ ۖ وَمَن يُضْلِلِ اللَّهُ فَلَن تَجِدَ لَهُ سَبِيلًا
বাংলা অর্থ:
৮৮। অনন্তর তোমাদের কি হইল যে, তোমরা এই মুনাফেকদের ব্যাপারে দুই দল হইয়া গেলে? অথচ আল্লাহ্ তা‘আলা ইহাদের আমলের দরুন ইহাদিগকে উল্টা দিকে ফিরাইয়া দিয়াছেন; তোমরা কি ইচ্ছা রাখ যে, এইরূপ লোকদিগকে হেদায়ত করিবে, যাহাদিগকে আল্লাহ্ তা‘আলা গোমরাহীতে নিপতিত রাখিয়াছেন? এবং যাহাকে আল্লাহ্ তা‘আলা গোমারহীতে নিপতিত রাখেন, তাহার (মু’মেন হওয়ার) জন্য কোনই পথ খুঁজিয়া পাইবে না।
وَدُّوا لَوْ تَكْفُرُونَ كَمَا كَفَرُوا فَتَكُونُونَ سَوَاءً ۖ فَلَا تَتَّخِذُوا مِنْهُمْ أَوْلِيَاءَ حَتَّىٰ يُهَاجِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ فَإِن تَوَلَّوْا فَخُذُوهُمْ وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ وَجَدتُّمُوهُمْ ۖ وَلَا تَتَّخِذُوا مِنْهُمْ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
বাংলা অর্থ:
৮৯। তাহারা এই আশা করে যে, যেমন তাহারা কাফের, তদ্রূপ তোমরাও কাফের হইয়া যাও, যাহাতে তোমরা ও তাহারা একরূপ হইয়া যাও, অতএব, তাহাদের মধ্যে হইতে কাহাকেও বন্ধু বানাইও না-যে পর্যন্ত না তাহারা আল্লাহর পথে হিজরত করে; আর যদি তাহারা বিমুখ হয়, তবে তাহাদিগকে ধর এবং হত্যা কর, যেখানেই তাহাদিগকে পাও, আর তাহাদের মধ্যে কাহাকেও বন্ধুরূপে গ্রহণ করিও না এবং সাহায্যকারীরূপেও নহে।
إِلَّا الَّذِينَ يَصِلُونَ إِلَىٰ قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُم مِّيثَاقٌ أَوْ جَاءُوكُمْ حَصِرَتْ صُدُورُهُمْ أَن يُقَاتِلُوكُمْ أَوْ يُقَاتِلُوا قَوْمَهُمْ ۚ وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَسَلَّطَهُمْ عَلَيْكُمْ فَلَقَاتَلُوكُمْ ۚ فَإِنِ اعْتَزَلُوكُمْ فَلَمْ يُقَاتِلُوكُمْ وَأَلْقَوْا إِلَيْكُمُ السَّلَمَ فَمَا جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ عَلَيْهِمْ سَبِيلًا
বাংলা অর্থ:
৯০। কিন্তু যাহারা এইরূপ যে, এমন লোকের সহিত মিলিত হয়, তাহাদের মধ্যে এবং তোমাদের মধ্যে চুক্তি রহিয়াছে কিংবা তোমাদের নিকট এইরূপ অবস্থায় উপস্থিত হয় যে, তাহাদের অন্তর তোমাদের সহিত ও স্বীয় সম্প্রদায়ের সহিত সংগ্রাম করিতে সংকোচ বোধ করে (ইহাদের সম্বন্ধে এই নির্দেশ প্রযোজ্য নহে); আর যদি আল্লাহ্ তা‘আলা ইচ্ছা করিতেন, তবে তাহাদিগকে তোমাদের উপর প্রবল করিয়া দিতেন, অনন্তর তাহারা তোমাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিত, অতএব, যদি তাহারা তোমাদের হইতে নিবৃত্ত থাকে অর্থাৎ, তোমাদের সহিত যুদ্ধ না করে এবং তোমাদের সহিত শান্তি ভাব রক্ষা করে, তবে আল্লাহ্ তোমাদিগকে তাহাদের প্রতি (হত্যা বা আবদ্ধ করার) কোন পন্থা (-এর অনুমতি) দেন নাই।
সূরা-আন-নিসা বাংলা (আয়াত ৭৭-৯০) শানে নুযূল
১) মাস্আলাঃ সালামের জওয়াব দেওয়া ওয়াজিব। (বঃ কোঃ)
২) কতিপয় কাফের মক্কা হইতে মদীনায় আসিয়া বলিল যে, আমরা মুসলিম মুহাজির। অতএবঃ বাণিজ্যের ভান করিয়া মক্কায় ফিরিয়া যায় পুঃআর পত্যাবর্তন করে নাই। মুসলমানদের কেহ তাহাদেরকে কাফের বলিল। এই আয়াতে তাহাদেরকে কাফের আখ্যা দিয়া হত্যার আদেশ হইয়াছে। (বঃ কোঃ)
৩) সুরাক্বা ইবনে মালেক মুদলেজী বদর ও ওহুদের ঘটনার পর হুযূরের কেদমতে আসিয়া বলিল, আমাদের সহিত সন্ধি করুন। হুযূর সন্ধির উদ্দেশ্যে হযরত খালেদা কে তথায় প্রেরণ করিলেন। এই শর্তে সন্ধি হইল যে, “তাহারা মুসলমানদের প্রতিপক্ষের সাহায্য করিবে না। ক্বোরাইশ কাফেরেরা ইসলাম গ্রহণ করিলে তাহারাও ইসলাম গ্রহণ করিবে। তাহাদের সম্মিলিত সমস্ত সম্প্রদায় তাহাদের এই চুক্তিতে শরীক থাকিবে। এই সম্বন্ধে উক্ত আয়াতটি নাযিল হয়। (বঃ কোঃ)
সূরা-আন-নিসা বাংলা, এর আয়াত ৫৫ হতে ৭৬ পর্যন্ত বাংলা অর্থ পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
আমাদের, ফেসবুক পেইজে লাইক, শেয়ার এবং কমেন্টস করে আমাদের সাথেই থাকুন।