সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ ও শানে নযুল

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ
সর্বমোট আয়াত-৪৩

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু

المر ۚ تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ ۗ وَالَّذِي أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ الْحَقُّ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يُؤْمِنُونَ

বাংলা অর্থ:

১। আলীফ, লাম-মীম-রা। এইগুলি এক বড় কিতাবের আয়াতসমূহ; আর যাহাকিছু আপনার প্রতি আপনার রব্বের তরফ হইতে অবতীর্ণ করা হয় উহা সম্পূর্ণ সত্য, কিন্তু অধিকাংশ লোকই ঈমান আনে না।

اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ۖ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۖ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ۖ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُّسَمًّى ۚ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ يُفَصِّلُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُم بِلِقَاءِ رَبِّكُمْ تُوقِنُونَ

বাংলা অর্থ:

২। আল্লাহ এমন যে তিনি আসমানসমূহকে খুঁটি ব্যতীত ঊধ্বস্থিত করিয়াছেন, যেমন তোমরা উহাদিগকে দেখিতেছ, অত:পর আরশের উপর প্রতিষ্ঠিত হইলেন, এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কার্যে রত করিলেন; প্রত্যেক এক নির্দিষ্ট সময়ে চলিতে থাকে; তিনিই সকল কাজের পরিচালনা করেন, প্রমানসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যাহাতে তোমরা নিজেদের প্রতিপালকের নিকট উপস্থিত হওয়া বিশ্বাস কর।

وَهُوَ الَّذِي مَدَّ الْأَرْضَ وَجَعَلَ فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنْهَارًا ۖ وَمِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ جَعَلَ فِيهَا زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ ۖ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ ۚ إِنَّ فِي ذَ‌ٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

বাংলা অর্থ:

৩। আর তিনি এমন যে, তিনি পৃথিবীকে প্রসারিত করিয়াছেন এবং তাহাতে পর্বতমালা ও নহর সমূহ সৃষ্টি করিয়াছেন; এবং তাহাতে প্রত্যেক প্রকারের ফল হইতে দুই দুই প্রকার সৃষ্টি করিয়াছেন, (টক ও মিষ্টি , ছোট ও বড়) তিনি রাত্রি দ্বারা দিনকে ঢাকিয়া দেন; এই সমস্ত বিষয়ে চিন্তাশীল লোকদের জন্য (তওহীদের) নিদর্শনসমূহ রহিয়াছে।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। “প্রতিষ্ঠিত হইলেন” বলিতে আমরা যেই অর্থ বুঝিয়া থাকি, তিনি সেই অর্থে প্রতিষ্ঠিত নহেন; বরং খোদার পক্ষে যেইভাবে শোভনীয় সেই ভাবেই আরশের উপর প্রতিষ্ঠিত আছেন। (ব: কো:)
২। বস্তুত: তাহাই হয় সূর্য স্বীয় রাশিচক্র এক বৎসরে এবং চন্দ্র এক মাসে অতিক্রম করে। কেবল চন্দ্র-সূর্যের গতি নিয়ন্ত্রণই নহে, সৌর জগতের সবকিছুর তত্ত্বাবধানও তিনি করিয়া থাকেন। (ব: কো:)
৩। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা যখন আসমান, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদির ন্যায় বৃহদাকার বস্তু সৃষ্টি করিতে পারিয়াছেন, তখন মৃতকে পুনজীবন দান করা তাঁহার পক্ষে নি:সন্দেহে অসম্ভব নহে। তৎসঙ্গে সর্বজন সমর্থিত সত্যবাদী হযরত (দ:) ইহার সংবাদ দিতেছেন। অতএব, সেই সম্ভাব্য বিষয়টিও ধ্রুব সত্য। (ব: কো:)
৪। যেমন একটি মিষ্ট, অপরটি টক, একটি এক রঙ্গের অপরটি অন্য রঙ্গের ইত্যাদি। (ব: কো:)

وَفِي الْأَرْضِ قِطَعٌ مُّتَجَاوِرَاتٌ وَجَنَّاتٌ مِّنْ أَعْنَابٍ وَزَرْعٌ وَنَخِيلٌ صِنْوَانٌ وَغَيْرُ صِنْوَانٍ يُسْقَىٰ بِمَاءٍ وَاحِدٍ وَنُفَضِّلُ بَعْضَهَا عَلَىٰ بَعْضٍ فِي الْأُكُلِ ۚ إِنَّ فِي ذَ‌ٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ

বাংলা অর্থ:

৪। আর ভূপৃষ্ঠে রহিয়াছে বিভিন্ন প্রকার পাশাপাশি ভূখন্ডসমূহ এবং আঙ্গুরের বাগানসমূহ এবং কৃষিক্ষেত্রসমূহ রহিয়াছে, আর খেজুর গাছ রহিয়াছে, যাহার কতিপয় তো এমন যে, এক গুঁড়ি হইতে দুই বা ততোধিক গাছ উৎপন্ন হয়, এবং কতিপয় এইরূপ হয় না, সকলকে এই পানি সিঞ্চন করা হয়। অথচ আমি ফলগুলির মধ্যে একটিকে অপরটির উপর শ্রেষ্টত্ব প্রদান করি; এই সমস্ত বিষয়ে নিদর্শন সমূহ রহিয়াছে বুদ্ধিমান লোকদের জন্য।

وَإِن تَعْجَبْ فَعَجَبٌ قَوْلُهُمْ أَإِذَا كُنَّا تُرَابًا أَإِنَّا لَفِي خَلْقٍ جَدِيدٍ ۗ أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ ۖ وَأُولَـٰئِكَ الْأَغْلَالُ فِي أَعْنَاقِهِمْ ۖ وَأُولَـٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ

বাংলা অর্থ:

৫। আর যদি আপনি আশ্চর্য মনে করেন, তবে আশ্চর্যজনকই তাহাদের এই উক্তিগুলি-যখন আমরা মাটিতে মিশিয়া যাইব তখন কি আবার নুতনভাবে সৃষ্ট হইব? তাহারা সেই লোক যাহারা নিজেদের প্রতিপালকের সহিত কুফর করিয়াছে আর এমন লোকদের স্কন্ধে বেড়ি পরান হইবে, এবং এইরূপ লোকেরাই হইবে জাহান্নামের অধিবাসী, তাহারা উহাতে চিরকাল থাকিবে।

وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِالسَّيِّئَةِ قَبْلَ الْحَسَنَةِ وَقَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِمُ الْمَثُلَاتُ ۗ وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ لِّلنَّاسِ عَلَىٰ ظُلْمِهِمْ ۖ وَإِنَّ رَبَّكَ لَشَدِيدُ الْعِقَابِ

বাংলা অর্থ:

৬। আর ইহারা সুখ- শান্তি পূর্বে অশান্তির জন্য আপনাকে পীড়াপীড়ি করে, অথচ তাহাদের পূর্বে আযাবের বহু দৃষ্টান্ত অতীত হইয়াছে; আর একথাও স্থির নিশ্চিত যে, আপনার প্রতিপালক মানুষের অপরাধসমূহ ক্ষমা করিয়া দেন , তাহাদের অন্যায়চার সত্ত্বেও এবং এই কথাও স্থির নিশ্চিত যে, আপনার রব্ব কঠিন শাস্তি প্রদান করেন।

وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِّن رَّبِّهِ ۗ إِنَّمَا أَنتَ مُنذِرٌ ۖ وَلِكُلِّ قَوْمٍ هَادٍ

বাংলা অর্থ:

৭। এবং এই কাফেররা ইহা (-ও) বলে যে, তাহার প্রতি তাহার রব্বের তরফ হইতে বিশেষ মু’জেযা নাযিল করা হইল না কেন? আপনি কেবল ভয় প্রদর্শক, আর প্রত্যেক কাওমের জন্য এক একজন পথপ্রদর্শক হইয়া থাকেন।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। অর্থাৎ যমীনের বিভিন্ন অঞ্চলগুলি পরস্পর মিলিত হওয়া সত্ত্বেও উহাদের প্রাকৃতিক অবস্থা ও গুণাগুণ বিভিন্ন হওয়া নিশ্চয়ই বিস্ময়কর ব্যাপার। (ব: কো:)
২। “সেনওয়ান” (দুই কান্ড) উপমা হিসাবেই বলা হইয়াছে। ইহার প্রকৃত অর্থ অনেক কান্ড বিশিষ্ট; কেননা, বহু খেজুর বৃক্ষে দুইয়ের অধিক কান্ড ও দেখা গিয়াছে । তবে সাধারণত; দুইয়ের বেশি হয় না বলিয়াই দুই কান্ড বলা হইয়াছে ।(ব: কো:)
৩। কেননা, হাশর-নশর অমান্য করাতে প্রকারান্তরে কুদরতের প্রতিই অবিশ্বাস করা হয়। দ্বিতীয়ত: হাশর–- নশর অমান্য করার ফলস্বরূপ তাহারা যেই নুবুওয়াত অবিশ্বাস করিতেছে তাহাতে প্রকারান্তরে খোদার একটি বিশেষ গুণকে অস্বীকার করা হইতেছে। খোদা সত্যের সহায়ক; কিন্তু তাহারা বলিতেছে, তিনি মিথ্যাবাদীর সহায়তা করিয়া সত্যকে ধামাচাপা দিতেছেন। (ব: কো:)

اللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَحْمِلُ كُلُّ أُنثَىٰ وَمَا تَغِيضُ الْأَرْحَامُ وَمَا تَزْدَادُ ۖ وَكُلُّ شَيْءٍ عِندَهُ بِمِقْدَارٍ

বাংলা অর্থ:

৮। আল্লাহ তা‘আলা সমস্তই জানেন, যাহাকিছু প্রত্যেক স্ত্রীলোক গর্ভে ধারণ করিয়া থাকে এবং যাহাকিছু জরায়ুতে কম ও বেশী হইয়া থাকে; আর সমস্ত বস্তু আল্লাহর নিকট রহিয়াছে এক নির্দিষ্ট পরিমাণে।

عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْكَبِيرُ الْمُتَعَالِ

বাংলা অর্থ:

৯। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্য সকল বস্তু সম্বন্ধে অবগত আছেন সুমহান, সমুন্নত।

سَوَاءٌ مِّنكُم مَّنْ أَسَرَّ الْقَوْلَ وَمَن جَهَرَ بِهِ وَمَنْ هُوَ مُسْتَخْفٍ بِاللَّيْلِ وَسَارِبٌ بِالنَّهَارِ

বাংলা অর্থ:

১০। এই সবই সমান- তোমাদের মধ্যকার যে কেহ কোন কথা চুপে চুপে বলে এবং যে উচ্চ স্বরে বলে, আর যে ব্যক্তি রাত্রিকালে কোথাও আত্মগোপন করে এবং যেদিনের বেলায় চলাফেরা করে।

لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِّن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ ۗ وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِقَوْمٍ سُوءًا فَلَا مَرَدَّ لَهُ ۚ وَمَا لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَالٍ

বাংলা অর্থ:

১১। প্রত্যেক মানুষের জন্য কতিপয় ফেরেশতা রহিয়াছে, যাহাদের বদলি হইতে থাকে, কতিপয় তাহার সম্মুখে এবং কতিপয় তাহার পিছনে, যাহারা আল্লাহর আদেশে তাহার হেফাযত করে; নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত তাহারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন না করে; আর যখন আল্লাহ তা’আলা কোন জাতির উপর বিপদ নিপতিত করার সিদ্ধান্ত করেন তখন উহা সরিবার কোন উপায় নাই, এবং আল্লাহ ব্যতীত আর কেহ তাহাদের জন্য সহায় হয় না ।

هُوَ الَّذِي يُرِيكُمُ الْبَرْقَ خَوْفًا وَطَمَعًا وَيُنشِئُ السَّحَابَ الثِّقَالَ

বাংলা অর্থ:

১২। তিনি এমন যে, তোমাদিগকে বিদ্যুৎ প্রদর্শন করেন, যাহাতে আশংকাও হয় এবং আশাও হয়, এবং তিনি মেঘমালাকে উচ্চে উঠান যাহা পানিতে পরিপূর্ণ থাকে।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। এই আয়াতে “হাদী” শব্দটি নবী ও নায়েবে নবীর ব্যাপক অর্থে গৃহীত হইয়াছে । কাজেই সকল দেশে নবীর আগমন নিশ্চিতরূপে প্রামণিত হয় না। সুতরাং পাক-ভারতে কোন উপদেষ্টা আসিয়া থাকিলে তাহার নবী হওয়া অনিবার্য নহে। হওয়াও বিচিত্র নহে। (ব: কো:)
২। ইহাতে কেহ যেন ধারণা না করেন যে, ফেরেশতাগণ যখন আমাদের হেফাযত করিতেছেন তখন আর চিন্ত কি? কুফরই করি, মহা পাপই করি, আমাদের প্রতি আযাব আসিবে না। এইরূপ ধারণা ভুল। (ব: কো:)
৩। অর্থাৎ মানুষ নিজের কর্মদোষে আল্লাহর তরফ হইতে বিপদ ভোগের যোগ্য হয়। তখন তিনি ব্যতীত তাহাদের সাহায্যকারী থাকে না। এমনকি তখন নেগাহবান ফেরেশতারাও নেগাহবানী ত্যাগ করে। (ব: কো:)
৪। “রা‘দ” শব্দটি মালায়িকা শব্দের নিকট আসাতে বুঝা যায়, ইহা এক ফেরেশতার নাম। তিরমিযী শরীফের এক মারফূ হাদীসেও বর্ণিত আছে রাদ এক ফেরেশতা । বিদ্যুৎ সেই রাদ ফেরেশতার হাতের অগ্নিময় চাবুকের চমকানী। মেঘের গর্জন রাদ ফেরেশতারই গর্জন। বৈজ্ঞানিকগণ মেঘ গর্জনের যেই তথ্য আবিষ্কার করিয়াছে, তাহা এই গর্জনের বাহ্য কারণ। আর হাদীসে যাহা বর্ণিত হইয়াছে, তাহা উহার আসল কারণ। হয়ত বিদ্যুৎ বৈজ্ঞানিকদের বর্ণিত অর্থেই ফেরেশতাদের করায়ত্তে থাকিতে পারে এবং উহা হইতে উৎপন্ন শব্দের উৎসস্থান ফেরেশতার গর্জন। যেমন মানুষের মুখে উচ্চরিত শব্দগুলির বাহ্যিক কারণ জিহবা চালনার ফলে বায়ুস্তর ভেদ করিয়া উহার ক্ষীণ আঘাত স্রোতার কর্ণ কুহরস্থ ঝিল্লিকে স্পর্শ করে। কিন্তু ইহার আসল কারণ মানুষের প্রাণ। (ব: কো:)

وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ وَيُرْسِلُ الصَّوَاعِقَ فَيُصِيبُ بِهَا مَن يَشَاءُ وَهُمْ يُجَادِلُونَ فِي اللَّهِ وَهُوَ شَدِيدُ الْمِحَالِ

বাংলা অর্থ:

১৩। এবং রা‘দ (ফেরেশতা) তাঁহার প্রশংসার সহিত পবিত্রতা বর্ণনা করে এবং (অন্যান্য) ফেরেশতাগণও তাঁহার ভয়ে, আর তিনি প্রেরণ করেন বিদ্যুৎসমূহ, অত:পর নিক্ষেপ করেন যাহার উপর ইচ্ছা, আর উহারা আল্লাহ সম্বন্ধে বিতর্ক করে, অথচ তিনি হইতেছেন অত্যন্ত ক্ষমতাবান;

لَهُ دَعْوَةُ الْحَقِّ ۖ وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِهِ لَا يَسْتَجِيبُونَ لَهُم بِشَيْءٍ إِلَّا كَبَاسِطِ كَفَّيْهِ إِلَى الْمَاءِ لِيَبْلُغَ فَاهُ وَمَا هُوَ بِبَالِغِهِ ۚ وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ

বাংলা অর্থ:

১৪। সত্য ডাক তাঁহারই জন্য নির্দিষ্ট রহিয়াছে; এবং ইহারা আল্লাহ ব্যতীত অপর যাহাদিগকে আহবান করে তাহারা উহাদের আবেদন ইহার চেয়ে অধিক গ্রহণ করিতে পারে না সেই (পিপাসাতুর) ব্যক্তির আবেদনের ন্যায় যেই ব্যক্তি স্বীয় হস্তদ্বয় প্রসারিত করিয়া দেয় পানির দিকে, যেন উহা তাহার মুখে আসিয়া পৌছে, অথচ উহা (নিজে নিজে) তাহার মুখে আসিয়া পৌছিবে না; আর (দেবতাদের নিকট) কাফেরদের আবেদন তো নিষ্ফল ।

وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَظِلَالُهُم بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ

বাংলা অর্থ:

১৫। আর সকলেই আল্লাহরই সম্মুখে মস্তক অবনত করিয়া আছে যাহারা আসমানসমুহে এবং যমীনে আছে, (কতক) স্বেচ্ছায় এবং (কতক) অনিচ্ছায় এবং তাহাদের ছায়াও (মস্তকাবনত করে) প্রাতে এবং সন্ধ্যায় ।

قُلْ مَن رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ قُلِ اللَّهُ ۚ قُلْ أَفَاتَّخَذْتُم مِّن دُونِهِ أَوْلِيَاءَ لَا يَمْلِكُونَ لِأَنفُسِهِمْ نَفْعًا وَلَا ضَرًّا ۚ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الْأَعْمَىٰ وَالْبَصِيرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِي الظُّلُمَاتُ وَالنُّورُ ۗ أَمْ جَعَلُوا لِلَّهِ شُرَكَاءَ خَلَقُوا كَخَلْقِهِ فَتَشَابَهَ الْخَلْقُ عَلَيْهِمْ ۚ قُلِ اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ

বাংলা অর্থ:

১৬। আপনি বলুন, আমসানসমুহ এবং পৃথিবীর প্রতিপালক কে? আপনিই বলিয়া দিন যে, আল্লাহ; আপনি বলুন, তবুও কি তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য সাহায্যকারী বির্ধারণ করিয়া লইয়াছ যাহারা নিজেদেরই কোন উপকারও অপকারের ক্ষমতা রাখে না? আপনি ইহাও বলুন যে, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হইতে পারে? অথবা অন্ধকার এবং আলোক কি কখনও সমান হইতে পারে? নাকি তাহারা আল্লাহর এমন শরীরক সাব্যস্ত করিয়া লইয়াছে যে, তাহারাও আল্লাহর সৃষ্টির অনুরূপ (কোনকিছু) সৃষ্টি করিয়াছে, অত:পর তাহাদের নিকট (উভয়) সৃষ্টি করা এক রকম মনে হইয়াছে। আপনি বলিয়া দিন যে, আল্লাহই হইতেছেন সকল বস্তুর সৃষ্টিকর্তা এবং তিনিই একক, মহা পরাক্রান্ত।

أَنزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَسَالَتْ أَوْدِيَةٌ بِقَدَرِهَا فَاحْتَمَلَ السَّيْلُ زَبَدًا رَّابِيًا ۚ وَمِمَّا يُوقِدُونَ عَلَيْهِ فِي النَّارِ ابْتِغَاءَ حِلْيَةٍ أَوْ مَتَاعٍ زَبَدٌ مِّثْلُهُ ۚ كَذَ‌ٰلِكَ يَضْرِبُ اللَّهُ الْحَقَّ وَالْبَاطِلَ ۚ فَأَمَّا الزَّبَدُ فَيَذْهَبُ جُفَاءً ۖ وَأَمَّا مَا يَنفَعُ النَّاسَ فَيَمْكُثُ فِي الْأَرْضِ ۚ كَذَ‌ٰلِكَ يَضْرِبُ اللَّهُ الْأَمْثَالَ

বাংলা অর্থ:

১৭। আল্লাহ তাআলা আসমান হইতে পানি বর্ষণ করিলেন, তৎপর নালাসমূহ নিজেদের পরিমাণ অনুযায়ী প্রবাহিত হইতে লাগিল অত:পর ঐ স্রোত ভাসাইয়া নিল আবর্জনাগুলি যাহা উহার উপর ভাসমান ছিল; আর যে সমস্ত পদার্থকে অলঙ্কার অথব আসবাব প্রস্তুত করিবার উদ্দেশ্যে অগ্নির মধ্যে উত্তপ্ত করিয়া থাকে তাহাতেও এই রকমই আবর্জনা (উপর উঠিয়া) থাকে; এই ভাবেই আল্লাহ তা‘আলা হ্ক্ব এবং বাতেলের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেন; বস্তুত: যাহা আবর্জনা উহা তো ফেলিয়া দেওয়া হয়, আর যাহাকিছু মানুষের প্রয়োজনীয় তাহা ভূপৃষ্ঠে থাকিয়া যায়; আল্লাহ তা‘আলা এইভাবেই উপমাসমূহ বর্ণনা করিয়া থাকেন।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। এই উপমাদ্বয়ের দুই প্রকারের পদার্থ প্রকাশ পাইল, এক প্রকার কাজের আর এক প্রকার অকেজো। আবর্জনা বহকারী পানি এবং অগ্নির উত্তাপে গলিত ধাতব দ্রব্য হইল কাজের জিনিস, আর স্রোতে প্রবাহিত পানির উপর ভাসমান আবর্জনা এবং গলিত ধাতু হইতে নির্গত আবর্জনা হইল অকেজো । এই দৃষ্টান্ত দ্বয়ের সারমর্ম এই যে, ক্ষণকালের জন্য খাঁটি জিনিসের উপর অপদার্থ গুলি দৃষ্ট হইলেও তাহা পরিত্যক্ত ও বিদুরিত হয়; কিন্তু খাঁটি জিনিস সাদরে রক্ষিত হয়। তদ্রুপ বাতিল ও অলীক বিষয় ক্ষণেকের তরে হক্ব বিষয়ের উপর দৃষ্ট হইলেও পরিণামে হক্বই বহাল থাকে এবং বাতির পরাভূত ও নিশ্চিহ্ন হইয়া যায় । (ব:কো: জালালাইন)

لِلَّذِينَ اسْتَجَابُوا لِرَبِّهِمُ الْحُسْنَىٰ ۚ وَالَّذِينَ لَمْ يَسْتَجِيبُوا لَهُ لَوْ أَنَّ لَهُم مَّا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لَافْتَدَوْا بِهِ ۚ أُولَـٰئِكَ لَهُمْ سُوءُ الْحِسَابِ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ ۖ وَبِئْسَ الْمِهَادُ

বাংলা অর্থ:

১৮। যাহারা স্বীয় প্রতিপালকের আদেশ মান্য করিয়াছে, তাহাদের জন্য উত্তম বিনিময় রহিয়াছে; আর যাহারা তাঁহার আদেশ মানে নাই, (পরলোক) তাহাদের নিকট যদি সমগ্র দুনিয়ার দ্রব্যসমূহ থাকে এবং উহার সঙ্গে উহারই সমান আরও (ধন- সম্পদ) থাকে, তবে (আযাব হইতে) নিজেদের মুক্তির জন্য সমস্তই দিতে চাহিবে; এই লোকদের কঠিন হিসাব হইব, এবং তাহাদের (চিরস্থায়ী) নিবাস ইহবে জাহান্নাম; আর উহা অতি নিকৃষ্ট নিবাস।

أَفَمَن يَعْلَمُ أَنَّمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ الْحَقُّ كَمَنْ هُوَ أَعْمَىٰ ۚ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الْأَلْبَابِ

বাংলা অর্থ:

১৯। যেই ব্যক্তি এই বিশ্বাস রাখে যে, যাহাকিছু আপনার প্রতিপালকের পক্ষ হইতে আপনার প্রতি নাযিল হইয়াছে, উহা সত্য, এইরূপ ব্যক্তি কি তাহার মত হইতে পারে যে অন্ধ? বস্তুত: উপদেশ তো বুদ্ধিমান লোকেরাই গ্রহণ করে।

الَّذِينَ يُوفُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَلَا يَنقُضُونَ الْمِيثَاقَ

বাংলা অর্থ:

২০। এই রূপ লোকেরা এমন যে, তাহারা আল্লাহ তা‘আলার সহিত যাহাকিছু অঙ্গীকার করিয়াছে তাহা পূর্ণ করে এবং অঙ্গীকার ভঙ্গ করে না।

وَالَّذِينَ يَصِلُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَن يُوصَلَ وَيَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ وَيَخَافُونَ سُوءَ الْحِسَابِ

বাংলা অর্থ:

২১। আর তাহারা এমন যে, আল্লাহ যেই সম্পর্কসমূহ বহাল রাখিবার আদেশ করিয়াছেন উহাদিগকে বহাল রাখে এবং নিজ প্রতিপালককে ভয় করে এবং কঠিন আযাবের আশংকা করে;

وَالَّذِينَ صَبَرُوا ابْتِغَاءَ وَجْهِ رَبِّهِمْ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَأَنفَقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً وَيَدْرَءُونَ بِالْحَسَنَةِ السَّيِّئَةَ أُولَـٰئِكَ لَهُمْ عُقْبَى الدَّارِ

বাংলা অর্থ:

২২। আর ইহারা এমন যে, নিজেদের প্রতিপালকের সন্তুষ্টির অন্বেসণে দৃঢ় থাকে এবং নামাযের পাবন্দী করে, আর যাহাকিছু আমি তাহাদিগকে জীবিকা দিয়াছি উহা হইতে গোপনে এবং প্রকাশ্যেও ব্যয় করে এবং অসদ্ব্যবহারকে সদ্ব্যবহার দ্বারা বিদুরিত করে, পরকালের শুভ পরিণাম সেই সকল লোকদের জন্যই রহিয়াছে।

جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا وَمَن صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ ۖ وَالْمَلَائِكَةُ يَدْخُلُونَ عَلَيْهِم مِّن كُلِّ بَابٍ

বাংলা অর্থ:

২৩। অর্থাৎ স্থায়ী বসবাসের বাগানসমূহ, যাহাতে তাহারাও প্রবেশ করিবে, আর যাহার যোগ্য হইবে তাহাদের মাতাপিতার মধ্যে এবং স্ত্রীদের মধ্যে এবং সন্তানাদির মধ্যে তাহারাও প্রবেশ করিবে এবং ফেরেশতাগণ তাহাদের নিকট আগমন করিতে থাকিবে প্রত্যেক দ্বার দিয়া।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। ‘আহদ’ বলিতে আল্লাহ পাকের সেই সমস্ত আদেশ ও নিষেধাবলী পালনের অঙ্গীকার উদ্দেশ্যে যাহা তিনি আসমানী কিতাব দ্বারা নবীদের মারফতে মানুষ হইতে গ্রহণ করিয়াছেন। আর ‘মীসাক’ বলিতে সেই অঙ্গীকার উদ্দেশ্যে যাহা তিনি আলমে আরওয়াহে আদম-সন্তান হইতে গ্রহন করিয়াছেন। (ফ: ব:)
২। অর্থাৎ ঐ সমস্ত বিষয়ের সম্পর্ক বহাল রাখা যাহার সম্পর্ক রাখিতে আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিয়াছেন। বান্দার হক্বসমূহ ও সমস্ত আসমানী কিতাব এবং নবীদের প্রতি ঈমান রাখা ইহার অন্তগত। (ফ: ব:)
৩। আর ভয় বলিতে সেই ভয় উদ্দেশ্যে, যাহা ওয়াজিব কাজ করিতে উদ্বুদ্ধ করে এবং হারাম কাজ হইতে বিবৃত্ত রাখে । (ফ: ব:)
৪। অর্থাৎ খোদার সান্নিধ্যপ্রাপ্ত নেক বান্দাগণের কল্যাণে তাহাদের মুমিন পিতা-মাতা এবং স্ত্রী-পুত্রগণকেও তাহাদের শ্রেনীতে স্থান দেওয়া হইবে। (ব: কো:)

سَلَامٌ عَلَيْكُم بِمَا صَبَرْتُمْ ۚ فَنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِ

বাংলা অর্থ:

২৪। তোমরা শান্তির সহিত বসবাস করিবে, উহার কল্যাণে যে, তোমরা দৃঢ়পদ ছিলে, সুতরাং ঐ জগতে তোমাদের পরিণাম অতিশয় শুভ।

وَالَّذِينَ يَنقُضُونَ عَهْدَ اللَّهِ مِن بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَن يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ ۙ أُولَـٰئِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ

বাংলা অর্থ:

২৫। আর যাহারা আল্লাহ তা‘আলার অঙ্গীকার সমূহকে উহা দৃঢ় করার পর ভঙ্গ করে এবং আল্লাহ তা‘আলা যেই সম্পর্ক সমূহ বহাল রাখিবার আদেশ করিয়াছেন, তাহা ছিন্ন করে এবং দুনিয়ায় ফেতনা ফ্যাসাদ করে, এমন লোকদের উপর লা‘নত হইবে এবং পরকালে তাহাদের জন্য অশুভ পরিণাম হইবে।

اللَّهُ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَن يَشَاءُ وَيَقْدِرُ ۚ وَفَرِحُوا بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا مَتَاعٌ

বাংলা অর্থ:

২৬। আল্লাহ তা‘আলা যাহাকে ইচ্ছা প্রচুর জীবিকা দান করেন এবং (যাহাকে ইচ্ছা ) সঙ্কীর্ণ করিয়া দেন; আর ইহারা পার্থিব জীবনের উপর গর্ব করে; অথচ এই পার্থিব জীবন আখেরাতের তুলনায় অতি তুচ্ছ সামগ্যী ভিন্ন আর কিছুই নহে।

وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِّن رَّبِّهِ ۗ قُلْ إِنَّ اللَّهَ يُضِلُّ مَن يَشَاءُ وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَنْ أَنَابَ

বাংলা অর্থ:

২৭। আর এই কাফেররা বলে, তাহার প্রতি তাহার প্রতিপালকের পক্ষ হইতে কোন (ফরমায়েশী) মু’জেযা কেন নাযিল করা হইল না? আপনি বলিয়া দিন, বাস্তবিকই আল্লাহ যাহাকে ইচ্ছা বিপথগামী করিয়া দেন এবং যে ব্যক্তি তাহার দিকে নিবিষ্ট হয়, তাহাকে নিজের দিকে পথ দেখান।

الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللَّهِ ۗ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ

বাংলা অর্থ:

২৮। ইহারা হইতেছে ঐ সমস্ত লোক যাহারা ঈমান আনিয়াছে এবং আল্লাহর যিকিরে তাহাদের অন্ত:করণ তৃপ্ত হয়; উত্তমরূপে বুঝিয়া লও যে, আল্লাহর যিকিরেই অন্তরসমূহে শান্তি লাভ হইয়া থাকে।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। উপরে একটি আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নেকারদের প্রতি নিজের সন্তুষ্টি প্রকাশ করিয়াছেন এবং তাহাদের জন্য জান্নাতের ওয়াদা করিয়াছেন। আর বদকারদের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করিয়াছেন এবং তাহাদের বাসস্থান দোযখ নিধারণ করিয়াছেন। এই স্থলে একটি প্রশ্ন হইতে পারে যে, পৃথিবীতে দেখা যায়, অনেক বদলোক সুখে শান্তিতে বাস করিতেছে এবং অনেক নেক লোক কষ্টে জীবন যাপন করিতেছে, ইহার কারণ কি? এই সন্দেহ অপনোদন করিয়া আল্লাহ এই খানে বলিয়াছেন, দুনিয়ার সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ও দু:খ কষ্ট নেক আমল ও বদ আমলের উপর নির্ভরশীল নহে; বরং নেক আমল ও বদ আমলের জন্য পরজগতে বিশেষ বিশেষ পুরস্কার এবং শাস্তি বিধারিত রহিয়াছে । নশ্বর দুনিয়ার দুঃখ কষ্ট সুখ স্বাচ্ছন্দ্য অস্থায়ী। (ই: কা:)

الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ طُوبَىٰ لَهُمْ وَحُسْنُ مَآبٍ

বাংলা অর্থ:

২৯। যাহারা ঈমান আনিয়াছে এবং নেককাজ করিয়াছে, তাহাদের জন্য রহিয়াছে শান্তিময় জীবন এবং শুভ পরিণাম।

كَذَ‌ٰلِكَ أَرْسَلْنَاكَ فِي أُمَّةٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهَا أُمَمٌ لِّتَتْلُوَ عَلَيْهِمُ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِالرَّحْمَـٰنِ ۚ قُلْ هُوَ رَبِّي لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ مَتَابِ

বাংলা অর্থ:

৩০। এইরূপেই আমি আপনাকে এমন উম্মতের মধ্যে রাসুলরূপে প্রেরণ করিয়াছি যাহাদের পূর্বে আরও বহু উম্মত অতীত হইয়া গিয়াছে, যেন আপনি তাহাদিগকে সেই কিতাব পড়িয়া শুনান যাহা আমি আপনার নিকট ওহীর মাধ্যমে পাঠাইয়াছি, আর তাহারা এমন মহান দয়ালু নাফরমানী করিতেছে; আপনি বলিয়া দিন যে, তিনি আমার প্রতিপালক তিনি ভিন্ন আর কেহ এবাদতের যোগ্য নাই, আমি তাহারই উপর ভরসা করিয়াছি এবং তাহারই নিকট আমাকে যাইতে হইবে।

وَلَوْ أَنَّ قُرْآنًا سُيِّرَتْ بِهِ الْجِبَالُ أَوْ قُطِّعَتْ بِهِ الْأَرْضُ أَوْ كُلِّمَ بِهِ الْمَوْتَىٰ ۗ بَل لِّلَّهِ الْأَمْرُ جَمِيعًا ۗ أَفَلَمْ يَيْأَسِ الَّذِينَ آمَنُوا أَن لَّوْ يَشَاءُ اللَّهُ لَهَدَى النَّاسَ جَمِيعًا ۗ وَلَا يَزَالُ الَّذِينَ كَفَرُوا تُصِيبُهُم بِمَا صَنَعُوا قَارِعَةٌ أَوْ تَحُلُّ قَرِيبًا مِّن دَارِهِمْ حَتَّىٰ يَأْتِيَ وَعْدُ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُخْلِفُ الْمِيعَادَ

বাংলা অর্থ:

৩১। আর যদি এমন কোন কোরআন হইত, যাহা দ্বারা পর্বতমালা স্থানান্তরিত করা যাইত অথবা উহার সাহায্যে ভূপৃষ্ঠে দ্রুত অতিক্রম করা যাইত অথবা উহার সাহায্যে মৃতদের সহিত বাক্যালাপ কর যাইত, তবুও তাহার ঈমান আনত না; বরং সমস্ত ক্ষমতা আল্লাহরই জন্য রহিয়াছে এতদসত্ত্বেও কি ঈমানদারদের এই কথার প্রতি মন স্থির হইল না যে, আল্লাহ যদি চাহিতেন তবে সমস্ত মানুষকে হেদায়ত করিয়া দিতেন; আর এই কাফেররা তো সর্বদা এইকয় অবস্থায় থাকে যে, তাহাদের কার্যকলাপের দরুন তাহাদের উপর (ইহাকালে) কোন না কোন আকস্মিক বিপদ পতিত হইতে থাকে অথবা তাহাদের জনপদের নিকট (বিপদ) পতিত হইতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর ওয়াদা (আখেরাতের আযাব) আসিয়া পড়িবে; কখনও আল্লাহ তাআলা ওয়াদা খেলাফ করেন না।

وَلَقَدِ اسْتُهْزِئَ بِرُسُلٍ مِّن قَبْلِكَ فَأَمْلَيْتُ لِلَّذِينَ كَفَرُوا ثُمَّ أَخَذْتُهُمْ ۖ فَكَيْفَ كَانَ عِقَابِ

বাংলা অর্থ:

৩২। এবং অনেক রাসূলগণের সহিত বিদ্রুপ করা হইয়াছে যাহারা আপনার পূর্বে অতীত হইয়াছেন, অনন্তর আমি অবকাশ দিতে থাকি সেই কাফেরদিগকে, অত:পর আমি তাহাদিগকে পাকড়াও করিলাম । সুতরাং আমার শাস্তি কিরূপ (ভীষণ)ছিল।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। পূর্ববতী নবীগণকে যেমন তাহাদের উম্মত দের প্রতি পেরণ করিয়াছিলাম, তদ্রুপ আপনাকেও এই উম্মতের প্রতি রসূল করিয়া পাঠাইয়াছি । (ব: কো:)
২। যাহাকে আল্লাহ ঈমান আনিতে তাওফীক দেন, সে-ই-ঈমান আনে। আর তাহার চিরাচরিত নিয়ম, তিনি সত্যান্বেষী কে তাওফীক দান করেন এবং বিদ্বেষপরপায়ণকে বঞ্চিত রাখেন। কাফেরেরা তো নূতন নূতন মু’জেযাহর ফরমাইশ করিত। এই দিকে কোন কোন মুসলমানও এই সমস্ত ফরমাইশী মু‘জেযাহ প্রকাশ পাওয়ার কামনা করিত। তাহাদের ধারণা ছিল, হয়ত মু‘জেযাহ দেখিলে কাফেরেরা ঈমান আনিতেও পারে। তাহাদের ধারণার অসারতা প্রকাশ করার জন্য আল্লাহ বলেন, বিদ্বেষপরায়ণ লোকেরা ঈমান আনয়নের পাত্র নহে। ইহাও জানান হইল যে, ঈমান আনা না আনা খোদার ইচ্ছাধীন ইহাতে মু‘জেযাহর কোন ক্ষমতা নাই । (ব: কো:)

أَفَمَنْ هُوَ قَائِمٌ عَلَىٰ كُلِّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ ۗ وَجَعَلُوا لِلَّهِ شُرَكَاءَ قُلْ سَمُّوهُمْ ۚ أَمْ تُنَبِّئُونَهُ بِمَا لَا يَعْلَمُ فِي الْأَرْضِ أَم بِظَاهِرٍ مِّنَ الْقَوْلِ ۗ بَلْ زُيِّنَ لِلَّذِينَ كَفَرُوا مَكْرُهُمْ وَصُدُّوا عَنِ السَّبِيلِ ۗ وَمَن يُضْلِلِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِنْ هَادٍ

বাংলা অর্থ:

৩৩। যিনি প্রত্যেক ব্যক্তির কার্যাবলী সর্ম্পকে অবহিত থাকেন, তবুও কি তিনি এবং তাহাদের শরীকরা সাব্যস্ত করিয়াছে আপনি বলুন তাহাদের নাম তো বল; তোমরা কি আল্লাহ কে এমন কথার সংবাদ দিতেছ যে, ভূপৃষ্ঠে উহার খবর আল্লাহর নাই? অথবা কেবল বাহ্যিক শব্দ হিসাবে উহাদিগকে শরীক বলিতেছ? বরং সেই কাফেরদের নিকট নিজেদের ভ্রমাত্মক বাক্যবলী পছন্দনীয় বলিয়া মনে হয় এবং ইহারা সৎপথ হইতে বঞ্চিত রহিয়াছে; আর যাহাকে আল্লাহ তাআলা গোমরাবহীতে রাখেন তাহাকে পথে আনিবার কেহই নাই।

لَّهُمْ عَذَابٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَشَقُّ ۖ وَمَا لَهُم مِّنَ اللَّهِ مِن وَاقٍ

বাংলা অর্থ:

৩৪। তাহাদের জন্য পার্থিব জীবনে (-ও) আযাব রহিয়াছে এবং আখেরাতের আযাব বহু হইতেও বহু গুণে কঠিন, আর আল্লাহ তা’আলা হইতে তাহাদের কোন রক্ষাকারী হইবে না।

مَّثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ ۖ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ أُكُلُهَا دَائِمٌ وَظِلُّهَا ۚ تِلْكَ عُقْبَى الَّذِينَ اتَّقَوا ۖ وَّعُقْبَى الْكَافِرِينَ النَّارُ

বাংলা অর্থ:

৩৫। ধর্মপরায়ণ লোকদের প্রতি যেই বেহেশতের অঙ্গীকার করা হইয়াছে; উহা এইরূপ যে, উহার নিম্নদেশ দিয়া নহরসমূহ বহিতে থাকিবে; উহা ফল এবং উহা ছায়া চিরস্থায়ী থাকিবে; ইহাই হইবে ধর্মপরায়নদের পরিণাম, আর কাফেরদের পরিণাম হইবে দোযখ।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। অর্থাৎ তোমরা যাহাদিগকে আল্লাহর শরীক সাব্যস্ত করিতেছ, বল তো তাহারা কে? কী তাহাদের অবস্থা? (ব: কো:)
২। এখন জিজ্ঞাসা করি, তোমরা কি উহাদিগকে বাস্তবিক অংশীদার ভাবিতেছ? নাকি অলীক কল্পনাপ্রসূত শব্দের বাহ্য অর্থে শরীক বলিতেছ। যদি কল্পিত শরীক বলিয়া থাক, তবে তো প্রকারান্তরে তোমরা নিজেরাই স্বীকার করিতেছ যে, ইহারা শরীক নহে। রহিল বাস্তব অংশীদার ভাবিবার কথা, তাহা তো প্রমাণিত হইয়াছে যে, খোদার কোন শরীক নাই। যুক্তি দ্বারা ও তাহাদের দাবি অসার বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে। (ব: কো:)
৩। বেহেশতের মেওয়া বেহেশতীরা খাইতেই উহার স্থান আবার পূর্ণ হইয়া যাইবে, কাজেই উহার শেষ নাই। আর বেহেশতে সূর্য না থাকিলেও উহাতে একঅপূর্ব স্নিগ্ধ আলো স্থায়ীভাবে বিরাজ করিবে। (ব: কো:)

وَالَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَفْرَحُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ ۖ وَمِنَ الْأَحْزَابِ مَن يُنكِرُ بَعْضَهُ ۚ قُلْ إِنَّمَا أُمِرْتُ أَنْ أَعْبُدَ اللَّهَ وَلَا أُشْرِكَ بِهِ ۚ إِلَيْهِ أَدْعُو وَإِلَيْهِ مَآبِ

বাংলা অর্থ:

৩৬। আর যাহাদিগকে আমি কিতাব প্রদান করিয়াছি, তাহারা উহার (কোরআনের) প্রতি আনন্দিত হইয়াছে যাহা আপনার প্রতি নাযিল করা হইয়াছে, আর তাহাদের দলে কতিপয় এমন লোক রহিয়াছে যাহারা উহার কিছু অংশকে অস্বীকার করে আপনি বলুন আমার প্রতি কেবল এই আদেশ হইয়াছে যে, আমি যেন আল্লাহর এবাদত করি এবং কাহাকেও তাহার অংশী সাব্যস্ত না করি আমি আল্লাহরই দিকে আহবান করি, আর তাঁহারই দিকে আমাকে যাইতে হইবে।

وَكَذَ‌ٰلِكَ أَنزَلْنَاهُ حُكْمًا عَرَبِيًّا ۚ وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُم بَعْدَمَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا وَاقٍ

বাংলা অর্থ:

৩৭। আর এইরূপেই আমি ইহাকে অবতীণ করিয়াছি একটি বিশেষ বিধানরূপেই আরবী ভাষায় আর যদি আপনি তাহাদের প্রবৃত্তিজাত কল্পনাসমূহের অনুসরণ করিতে থাকেন আপনার নিকট জ্ঞান পৌছিবার পর, তবে আল্লাহর মুকাবেলায় আপনার না কোন সহায় হইবে, আর না কোন রক্ষাকারী ।

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِّن قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجًا وَذُرِّيَّةً ۚ وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَن يَأْتِيَ بِآيَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۗ لِكُلِّ أَجَلٍ كِتَابٌ

বাংলা অর্থ:

৩৮। আর নিশ্চয়ই আমি আপনার পূর্বেও বহু পয়গম্বর প্রেরণ করিয়াছি এবং আমি তাহাদিগকে স্ত্রী এবং সন্তানাদিও দিয়াছি; আর ইহা কোন রাসূলের ক্ষমতাধীন নহে যে, একটি আয়াতও আল্লাহর আদেশ ব্যতীত আনিতে পারে; প্রত্যেক কালের জন্য বিশেষ আহকাম হয়।

يَمْحُو اللَّهُ مَا يَشَاءُ وَيُثْبِتُ ۖ وَعِندَهُ أُمُّ الْكِتَابِ

বাংলা অর্থ:

৩৯। আল্লাহ যেই হুকুমকে ইচ্ছা রহিত করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা বহাল রাখেন, এবং মূল কিতাব তাহারই নিকট রহিয়াছে।

وَإِن مَّا نُرِيَنَّكَ بَعْضَ الَّذِي نَعِدُهُمْ أَوْ نَتَوَفَّيَنَّكَ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلَاغُ وَعَلَيْنَا الْحِسَابُ

বাংলা অর্থ:

৪০। আর আমি তাহাদের সহিত যাহার ওয়াদা করিতেছি, যদি উহার কিছুও আপনাকে দেখাইয়া দেই, কিংবা (তৎপূর্বে) আপনার মৃত্যু ঘটাই বস্তুত: আপনার যিম্মায় তো কেবল (হুকুম) পৌছানো, আর হিসাব লওয়া আমার কাজ।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। অর্থাৎ আপনি তাহাদিগকে বলিয়া দিন, আহকাম দ্বিবিধত, মৌলিক ও শাখাগত । মৌলিক বিষয়ে তোমাদের মতভেদ থাকিলে তাহা ভুল। কেননা, সমস্ত শরীঅতের মৌলিক বিষয় এক। আমি সেই মৌলিক বিষয়ের অনুসরণ করিতেই আদিষ্ট হইয়াছি। অর্থাৎ তাওহীদ, রিসালত ও পুনরুস্থল, এই তিনটি বিষয়ই ধর্মের মৌলিক বিষয়। ইহুদী, নাছারারা অবশ্য মোটামুটি ভাবে এই তিনটি বিষয় স্বীকার করে। (ব:কো:)
২। আরবী ভাষায় উল্লেখ দ্বারা বুঝা যায়, হুযূর (দ:) আরব দেশে আবিভূত হইয়াছিলেন বলিয়া কোরআন আরবীতে নাযিল হইয়াছে । প্রত্যেক নবীর প্রতি তদীয় ভাষাতেই কিতাব নাযিল হইয়াছে। (ব:কো:)
৩। ইহুদী নাছারারা হুযূরের প্রতি আক্রমণাত্নক উক্তিতে তাহার বহু বিবাহের উল্লেখ করিত আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াাতে উহার জবাব দিতেছেন। (ব:কো:)

أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا نَأْتِي الْأَرْضَ نَنقُصُهَا مِنْ أَطْرَافِهَا ۚ وَاللَّهُ يَحْكُمُ لَا مُعَقِّبَ لِحُكْمِهِ ۚ وَهُوَ سَرِيعُ الْحِسَابِ

বাংলা অর্থ:

৪১। তাহারা কি ইহা দেখে না যে, ভূমি-কে অনবরত চতুর্দিক হইতে কমাইয়া আনিতেছি; আর আল্লাহ্ আদেশ করেন, তাঁহার হুকুম টলাইবর কেহই নাই; এবং তিনি অতি ত্বরিত হিসা গ্রহণকারী।

وَقَدْ مَكَرَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَلِلَّهِ الْمَكْرُ جَمِيعًا ۖ يَعْلَمُ مَا تَكْسِبُ كُلُّ نَفْسٍ ۗ وَسَيَعْلَمُ الْكُفَّارُ لِمَنْ عُقْبَى الدَّارِ

বাংলা অর্থ:

৪২। আর তাহাদের পূর্ববতী লোকেরা (-ও) তদবীর করিয়াছিল, বস্তুত আসল তদবীর তো আল্ল্হারই; তিনি সকল বিষয় অবগত থাকেন প্রত্যেক ব্যক্তি যাহাকিছু করে আর এই কাফেররা অতি শীঘ্র জানিতে পারিবে যে, পরকালে শুভ পরিণাম কাহার জন্য রহিয়াছে।

وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَسْتَ مُرْسَلًا ۚ قُلْ كَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَمَنْ عِندَهُ عِلْمُ الْكِتَابِ

বাংলা অর্থ:

৪৩। আর এই কাফেররা এইরূপ বলিতেছে যে, আপনি রাসূল নহেন; আপনি বলিয়া দিন, আমার ও তোমাদের মধ্যস্থলে আল্লাহ তা’আলাই সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট, আর সেই ব্যক্তিই ও যাহার নিকট কিতাবের জ্ঞান আছে।

সূরা রাদ বাংলা অনুবাদ শানে নুযুলঃ

১। এই কাফেরেরা যে কেবল হযরতের নির্যাতন এবং ইসলামের বিরুদ্ধাচরনের কাজে অনবরত লাগিয়া রহিয়াছে ইহাতে কোনই ফলোদয় হইবে না। কেননা, ইহাদের পূর্ববতী কাফেরেরাও সত্যের ও মধ্যপন্থীদের বিরুদ্ধাচরণে বহু তদবীর করিয়াছিল, কিন্তু তাহাদের কোন তদবীরই ফলপ্রসূ হয় নাই। আসল তদবীর তো আল্লাহরই হাতে আল্লাহর বিরুদ্ধে কোন তদবীর কার্যকারী হইবরা নহে। কাজেই এই কাফেরদের কুমতলব আল্লাহ তা’আলাই পূর্ণ হইতে দিবেন না । (ব:কো: )
২। আল্লাহ তা’আলা এই খানে হুযূরকে নুবুওয়াতের দুইটি দলীল বলিয়া দিলেন। একটি এই যে আল্লাহ আমাকে নুবুওয়াতের প্রমাণস্বরূপ মু’জেযাহ দান করিয়াছেন আর একটি এই যে, পূর্ববতী আসমানী কিতাবসমূহে আমার আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী রহিয়াছে । (ব: কো:)

সূরা ইউসুফ এর বাংলা অনুবাদ ও শানে নজুল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সূরা হুদ এর বাংলা অনুবাদ ও শানে নজুল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সূরা ইউনুস এর বাংলা অনুবাদ ও শানে নজুল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সূরা আত-তাওবা এর বাংলা অনুবাদ ও শানে নজুল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সূরা আনফাল এর বাংলা অনুবাদ ও শানে নজুল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সূরা আরাফ এর বাংলা অনুবাদ ও শানে নজুল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সূরা আনআম এর বাংলা অনুবাদ ও শানে নজুল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সূরা আল-মায়েদা এর বাংলা অনুবাদ ও শানে নজুল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সূরা আন-নিসা এর বাংলা অনুবাদ ও শানে নজুল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
আমাদের, ফেসবুক পেইজে লাইক, শেয়ার এবং কমেন্টস করে আমাদের সাথেই থাকুন।