লাইলাতুল বারাআত এর তাৎপর্য

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু

১। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য, যিনি আমাদেরকে পবিত্র কুরআনুল কারিমের মাধ্যমে হেদায়েত দান করেছেন এবং আমাদেরকে সরল সঠিক পথ দেখানোর জন্য মুহাম্মাদ (সাঃ) কে প্রেরন করেছেন। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হউক মুহাম্মাদ (সাঃ), তাঁর পরিবারবর্গ এবং সাহাবীগণের উপর।

২। সম্মানিত দর্শকশ্রোতা! আল্লাহ তায়ালা আমাকে তাওফিক দান করলে কুরআন ও হাদিসের আলোকে “লাইলাতুল বারাআত এর তাৎপর্য” সম্পর্কে আলোচনা করব- ইনশা-আল্লাহ।

৩। কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তায়াল বলেন, আমি একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী।

৪। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। (সূরা দুখান)

৫। এ রাতে বান্দাকে ক্ষমা করার ঘোষনাঃ রাসূল (সাঃ) বলেন, “আল্লাহ তায়ালা শা’বানের মধ্যবর্তী রাতে বান্দাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন, অতঃপর মুশরিক ও শত্রুতা পোষণকারী ব্যতীত সকলকেই ক্ষমা করে দেন।” (ইবনে মাজাহ)

৬। শবে বরাত এর আমলঃ রাসূল (সাঃ) বলেন, “যখন শা’বানের মধ্যবর্তী রাত আগমন করবে, তখন তোমরা সে রাতে এবাদত করবে এবং দিনে রোজা রাখবে। কেননা, এ রাতে আল্লাহ তায়ালা সূর্য অস্তের সাথে সাথে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং আহবান করেন, আছে কেউ ক্ষমা প্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আছে কেউ রিযিক প্রার্থী? আমি তাকে রিযিক প্রদান করব। আছে কেউ বিপদগ্রস্ত? আমি তাকে বিপদমুক্ত করব। এভাবে ফজর পর্যন্ত ডাকতে থাকবেন।” (ইবনে মাজাহ)

৭। রমজানের প্রস্তুতিমূলক দোয়াঃ আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দুআয় বলতেন (রজব মাস থেকে) হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে রজব এবং শাবান মাসে বরকত দান করো এবং মাহে রামাদান পর্যন্ত আমাদেরকে পৌছে দাও।”

৮। রাসূল (সাঃ) এর শা’বান মাসে অধিক সাওম পালনঃ আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, “তিনি বলেন আমি রাসূল (সাঃ) কে রমাদান মাস ব্যতীত এত বেশি সংখ্যক রোজা রাখতে কখনো দেখিনি যতটা তিনি শা’বান মাসে রাখতেন।” (বুখারী ও মুসলিম)

৯। এ রাতে মহানবীর কবরস্থানে গমনঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, “এক রাতে আমি রাসূল (সাঃ) কে হারিয়ে ফেললাম, আমি তাঁর সন্ধান করার জন্য বের হলাম, দেখলাম তিনি জান্নাতুল বাকীতে আসমান অভিমুখে মাথা মোবারক উত্তোলন করে কিছু প্রার্থনা করছেন। আমাকে দেখে বললেন, আল্লাহ তায়ালা শা’বানের মধ্যবর্তী রাতে প্রথম আসমানে অবতরণ করে “কলব” গোত্রের ছাগলপালের পশম পরিমানের চেয়েও অধিক লোকের গুনাহ মাফ করে দেন।” (তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ)

১০। বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহ নিকট আশ্রয় চাইঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি অনু পরিমান ভাল কর্ম সম্পাদন করবে সে তা কিয়ামতের দিন তার আমলনামায় দেখতে পাবে। পক্ষান্তরে, যে কেউ অনু পরিমান অসৎ কর্ম করবে তাও সে সেই দিন (কিয়ামত) দেখতে পাবে।” (সুরা যিলযাল-৭-৮)