সুরা-বাকারাহ্ এর বাংলা অর্থ (আয়াত ৯০-১০২)

সুরা-বাকারাহ্
আয়াত-২৮৬

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়াল

بِئْسَمَا اشْتَرَوْا بِهِ أَنفُسَهُمْ أَن يَكْفُرُوا بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ بَغْيًا أَن يُنَزِّلَ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ ۖ فَبَاءُوا بِغَضَبٍ عَلَىٰ غَضَبٍ ۚ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ مُّهِينٌ

(৯০) নিতান্ত জঘন্য সেই অবস্থাটি যাহা অবলম্বন করিয়া তাহারা নিজেদের মুক্ত করিতে চায় অর্থাৎ অমান্য করে এমন জিনিস যাহা আল্লাহ্ নাযিল করিয়াছেন, শুধু (এই) হঠকারিতায় যে, আল্লাহ্ তা‘আলা নিজ দয়ায় তাঁহার বঞ্ছিত বান্দার উপর (কিছু) নাযিল করেন, সুতরাং তাহারা গযবের যোগ্য হইয়াছে; আর কাফেরদের জন্য আছে লাঞ্ছনাময় শাস্তি।

وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ قَالُوا نُؤْمِنُ بِمَا أُنزِلَ عَلَيْنَا وَيَكْفُرُونَ بِمَا وَرَاءَهُ وَهُوَ الْحَقُّ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَهُمْ ۗ قُلْ فَلِمَ تَقْتُلُونَ أَنبِيَاءَ اللَّهِ مِن قَبْلُ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ

(৯১) আর যখন তাহাদের বলা হয় তোমরা ঈমান আন ঐ সব কিতাবের উপর যাহা আল্লাহ্ তা‘আলা নাযিল করিয়াছেন, তখন বলে, আমরা ঈমান আনিব (শুধু) আমাদের প্রতি অবতারিত কিতাবের উপর। তদ্ব্যতীত আর সবগুলিকে তাহারা অস্বীকার করে, অথচ সেগুলিও (বাস্তবিকপক্ষে) সত্য, অধিকন্তু তাহাদের সঙ্গীয় কিতাবের সত্যতাও প্রমানকারী; আপনি বলুন, তবে কেন হত্যা করিতেছিলে আল্লাহ্র নবীগনকে ইতিপূর্বে, যদি তোমরা মুমেন ছিলে?

وَلَقَدْ جَاءَكُم مُّوسَىٰ بِالْبَيِّنَاتِ ثُمَّ اتَّخَذْتُمُ الْعِجْلَ مِن بَعْدِهِ وَأَنتُمْ ظَالِمُونَ

(৯২) আর মূসা (আঃ) আনিলেন তোমাদের নিকট জলন্ত প্রমানসমূহ তবুও তোমরা তাঁহার পর বাছুরকে সাব্যস্ত করিলে, আর তোমরা ছিলে অনাচারী।

وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّورَ خُذُوا مَا آتَيْنَاكُم بِقُوَّةٍ وَاسْمَعُوا ۖ قَالُوا سَمِعْنَا وَعَصَيْنَا وَأُشْرِبُوا فِي قُلُوبِهِمُ الْعِجْلَ بِكُفْرِهِمْ ۚ قُلْ بِئْسَمَا يَأْمُرُكُم بِهِ إِيمَانُكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ

(৯৩) আর যখন তোমাদের ওয়াদা লইলাম এবং তুলিয়া ধরিলাম তোমাদের উপর তূর পর্বত; গ্রহন কর যাহাকিছু আমি তোমাদিগকে দিতেছি সাহসের সহিত এবং শুন; তাহারা বলিল, শুনিলাম কিন্তু আমল করিতে পারিব না; আর মিশিয়া গিয়াছিল তাহাদের হ্যদয়ে সেই বাছুর, তাহাদের কুফরীর কারনে; আপনি বলুন, অত্যন্ত নিন্দনীয় যাহাকিছু আদেশ করিতেছে তোমাদের ঈমান, যদি তোমরা মুমেন হইয়া থাক।

শানে নুযুল:

১। ফঃ কোরআন শরীফকে তওরাতের সত্যতা প্রমানকারী বলার কারণ এই যে, তওরাতে হুজুর (দঃ) নবী এবং কোরআন আল্লাহর কালাম হওয়া সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বানী ছিল। সুতরাং কোরআন নাযিল হওয়ার পর কোরআনকে এবং কোরআন প্রচারককে অবিশ্বাস করিলে প্রকারান্তরে তওরাত কেই অবিম্বাস করা হইবে। (বঃকোঃ)
২। ফঃ কুফরীর দরুন তাহারা এক গযবের উপযুক্ত তো ছিলই, তদুপরি মুসলমানের প্রতি হিংসার দরুন আর এক গযবের উপযুক্ত হইলো। (বঃকোঃ)
৩। ফঃ তওরাত প্রাপ্ত হওয়ার পূর্বে মূসা (আঃ)র নুবুওয়্যাতের সত্যতা প্রমানের জন্য যেসমস্ত মু’জেযা প্রকাশ পাইয়াছিল যথা, লাঠি অজগরে পরিনত হওয়া, সমুদ্রের পানি দ্বিধা-বিভক্ত হওয়া প্রভৃতি। এখানে ‘জলন্ত প্রমাণ’ বলিতে তাহাকেই বুঝান হইয়াছে। (বঃকোঃ)

قُلْ إِن كَانَتْ لَكُمُ الدَّارُ الْآخِرَةُ عِندَ اللَّهِ خَالِصَةً مِّن دُونِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الْمَوْتَ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ

(৯৪) আপনি বলিয়া দিন, যদি শুধুমাত্র তোমাদেরই জন্য নির্ধারিত হইয়া থাকে পরজগতের উপভোগ আল্লাহর নিকট, অন্য কাহারও অংশ গ্রহন ব্যতীত, তবে তোমরা মৃত্যু কামনা করিয়া দেখাইয়া দেও, যদি তোমরা সত্যবাদী হইয়া থাক।

وَلَن يَتَمَنَّوْهُ أَبَدًا بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالظَّالِمِينَ

(৯৫) আর নিশ্চয় তাহারা কখনও উহা কামনা করিবে না; তাহাদের স্বহস্তকৃত আমলসমূহের দরুন; আর আল্লাহ্ তাআলা সবিশেষ অবগত আছেন এ সমস্ত যালিম সম্বন্ধে।

وَلَتَجِدَنَّهُمْ أَحْرَصَ النَّاسِ عَلَىٰ حَيَاةٍ وَمِنَ الَّذِينَ أَشْرَكُوا ۚ يَوَدُّ أَحَدُهُمْ لَوْ يُعَمَّرُ أَلْفَ سَنَةٍ وَمَا هُوَ بِمُزَحْزِحِهِ مِنَ الْعَذَابِ أَن يُعَمَّرَ ۗ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِمَا يَعْمَلُونَ

(৯৬) আর অবশ্যই আপনি তাহাদিগকে পাইবেন (পার্থিব) জীবনের প্রতি অন্যান্য লোক অপেক্ষা অধিক লালায়িত, এবং মুশরেকদের চেয়েও; উহাদের এক একজন এই লালসায় রহিয়াছে যে, তাহার আয়ু যেন সহস্র বৎসরের হইয়া যাই, আর ইহা তাহাকে তো আমার আযাব হইতে রক্ষা করিতে পারিবে না; অর্থাৎ দীর্ঘায়ু হইলেও; আর আল্লাহ্ দৃষ্টিগোচরে রহিয়াছে তাহাদের আমলসমূহ।

قُلْ مَن كَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِيلَ فَإِنَّهُ نَزَّلَهُ عَلَىٰ قَلْبِكَ بِإِذْنِ اللَّهِ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ وَهُدًى وَبُشْرَىٰ لِلْمُؤْمِنِينَ

(৯৭) আপনি বলুন, যে ব্যক্তি শত্রুতা রাখে জিব্রায়ীলের সহিত সে রাখুক), তিনি পৌঁছাইয়াছেন এই কোরআনকে আপনার অন্তঃকরন পর্যন্ত আল্লাহ্র হুকুমে, যে অবস্থায় উহা স্বীয় পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যতা প্রমান করিতেছে আর হেদায়ত করিতেছে ও সুসংবাদ দিতেছে মুমেনদিগকে।

শানে নুযুল:

১। বনী ইসরাঈলরা এক লবনাক্ত সমুদ্র পার হইয়া এক মূর্তিপূজক সম্প্রদায়কে দেখিতে পাইল এবং মূসাকে অনুরোধ করিল, আমাদের জন্য ইহাদের ন্যায় এক সাকার মা‘বুদের ব্যবস্থা করুন। ইহাই ছিল তাহাদের মানষিক অবনতির কারণ। (বঃকোঃ)
২। কেননা, তাহারা নিশ্চিতরূপেই জানিত যে, তাহারা বাতিল ও কুফরীর উপর প্রতিষ্ঠিত, পক্ষান্তরে রাসুলুল্লাহ্ (দঃ) ও মু’মিনগন সত্য ও ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত আছে, কাজেই ভয়ে তাহারা মুখটি পর্যন্ত নাড়িতে পারিল না। নতুবা হুযুরের সহিত তাহাদের যে শত্রুতা ছিল-যদ্দরুন হুযুরের ভবিষ্যদ্বাণীর উপর উত্তেজিত হইয়া সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুর কামনা করিয়া ফেলিত। কিন্তু তাহারা ভয়ে এরূপ আত্ম বিস্মৃত হইয়া পড়িয়াছিল যে, পাথরের ন্যায় দাঁড়াইয়া রহিল। বস্তুতঃ ইহা হুযুরের একটি অতি বড় মু’জেযাহ। (বঃকোঃ)

مَن كَانَ عَدُوًّا لِّلَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَرُسُلِهِ وَجِبْرِيلَ وَمِيكَالَ فَإِنَّ اللَّهَ عَدُوٌّ لِّلْكَافِرِينَ

(৯৮) যে ব্যক্তি শত্রু হয় আল্লাহর এবং তাঁহার ফেরেশতাগনের, তাঁহার রাসুলগনের, জিব্রায়ীলের এবং মিকায়ীলের, আল্লাহ্ এরূপ কাফেরদের শত্রু।

وَلَقَدْ أَنزَلْنَا إِلَيْكَ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ ۖ وَمَا يَكْفُرُ بِهَا إِلَّا الْفَاسِقُونَ

(৯৯) আর আমি তো আপনার প্রতি বহু স্পষ্ট প্রমান নাযীল করিয়াছি এবং তাহা কেহই অবিশ্বাস করে না হুকুম অমান্যে অভ্যস্তগন ব্যতীত।

أَوَكُلَّمَا عَاهَدُوا عَهْدًا نَّبَذَهُ فَرِيقٌ مِّنْهُم ۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ

(১০০) তবে কি, আর যখনই তাহারা যে কোন অয্গীকার করিয়া থাকে, উহাকে তাহাদের মধ্যে কোন না কোন দল প্রত্যাখ্যান করিয়া থাকে? পরন্ত তাহাদের মধ্যে বেশীর ভাগই তো ঈমানই রাখে না।

وَلَمَّا جَاءَهُمْ رَسُولٌ مِّنْ عِندِ اللَّهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْ نَبَذَ فَرِيقٌ مِّنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ كِتَابَ اللَّهِ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ كَأَنَّهُمْ لَا يَعْلَمُونَ

(১০১) আর যখনই তাহাদের নিকট একজন রাসুল আসিলেন আল্লাহর তরফ হইতে যিনি সত্যতাও প্রমান করিতেছেন, ঐ কিতাবের যাহা তাহাদের নিকট আছে, তখন ফেলিয়া দিল আহলে কিতাবদের একদল আল্লাহর এই কিতাবকেই তাহাদের পিছনের দিকে, যেন তাহারা কিছুই জানে না।

وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ ۖ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَـٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ ۚ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ ۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُم بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنفَعُهُمْ ۚ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۚ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنفُسَهُمْ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ

(১০২) আর তাহারা অনুসরন করিল এমন কাজের যাহার চর্চা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বকালে; আর সুলাইমান কুফরী করেন নাই, কিন্তু শয়তানরা (যাদু মন্ত্রের কথায় ও কাজে) কুফরী করিতেছিল; মানুষকেও যাদু বিদ্যা শিক্ষা দিতেছিল, আর (অনুসরন করিল) ঐ যাদুরও যাহা নাযিল করা হইয়াছিল বাবেলে হারূত ও মারূত ফেরেতাদ্বয়ের উপর; আর তাঁহারা শিক্ষা দিতেন না কাহাকেও যে পর্যন্ত না বলিয়া দিতেন যে, আমাদের অস্তিত্ব পরীক্ষামুলক সুতরাং তোমরা কাফের হইও না; ইতঃপর লোকে শিখিত তাহাদিগ হইতে এমন যাদু বিদ্যা যদ্বারা বিচ্ছেদ ঘটাইতো কোন পুরুষ ও তাহার স্ত্রীর মধ্যে; বস্তুতঃ তাহারা কোন ক্ষতি করিতে পারিবে না উহা দ্বারা কাহারও খোদার হুকুম ব্যতীত। আর শিখিত এমন বিষয় যাহা তাহাদের জন্য ক্ষতিকর, মঙ্গলজনক নহে; আর তাহারা অবশ্যই জানে, যে ব্যক্তি ইহা অবলম্বন করিবে, আখেরাতে তাহার কোন অংশ নাই, আর নিশ্চিত মন্দ উহা যাহার বিনিময়ে তাহারা নিজেদের প্রাণ দিতেছে; হায়, যদি তাহাদের বিবেক বুদ্ধি থাকিত।

শানে নুযুল:

১।  ইহুদীরা বলিত যে, জিব্রাঈল (আঃ) হযরত মোহাম্মদ (দঃ)-র নিকট কোরান শরীফ আনয়ন করেন, সে আমাদের প্রধান শত্রু। অতএব জিব্রাঈলের পরিবর্তে অপর কোন ফেরেশতা কোরান লইয়া আসিলে আমরা মোহাম্মদের উপর ঈমান আনিতাম। আল্লাহ্ ইহাকে লক্ষ্য করিয়াই আয়াতটি নাযিল করিয়াছেন। (মুঃকোঃ)
২।  ঘটনা: হযরত সুলাইমানের রাজত্বকালে জিনেরা যাদুর প্রক্রিয়া সম্বলিত একটি গন্থ জনসাধারনের মধ্যে প্রচার করিয়াছিল। হযরত সুলাইমান উক্ত কিতাবটি একটি সিন্দুকে আবদ্ধ করতঃ মাটিতে পুঁতিয়া ফেলেন। হযরত সুলাইমানের মৃত্যুর পর জিনেরা উহা বাহির করিয়া লোকসমাজে বলিল যে, সুলায়মান এই কিতাবের বলেই রাজত্ব করিতেন। আল্লাহ্ একথারই খন্ডন করিয়া বলেন যে,সুলায়মান যাদুর আমল করিতেন না। (মুঃকোঃ)

সূরা ফাতিহা পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সুরা-বাকারাহ্ এর আয়াত ০১ হতে ৪৮ পর্যন্ত বাংলা অর্থ পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সুরা-বাকারাহ্ এর আয়াত ৪৯ হতে ৭১ পর্যন্ত বাংলা অর্থ পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-
সুরা-বাকারাহ্ এর আয়াত ৭২ হতে ৮৯ পর্যন্ত বাংলা অর্থ পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন-