মৃত্যু যন্ত্রণা আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঈমান প্রহণযোগ্য হওয়ার, মুশরিকদের ব্যাপারে ইসতিগফার রহিত হওয়ার ও মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরণকারীর জাহান্নামী হওয়ার এবং তারা কোনমতেই পরিত্রাণ না পাওয়ার দলীলঃ-
৩৯) হারমালা ইবনে ইয়াহইয়া আত-তুজীবী রহ…সাঈদ ইবনে মুসায়্যুাব রহ.-এর সূত্রে তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, আবূ তালিবের মৃত্যুর সময় রাসূলুল্লাহ (সা) তার কাছে উপস্থিত হলেন। তিনি সেখানে আবূ জাহল ও আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ উমাইয়া ইবনে মুগীরাকে দেখতে পেলেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন হে চাচাজান! আপনি কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলুন। আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য এর উসিলায় সাক্ষ্য দিব। আবূ জাহল ও আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ উমাইয়া বলল, হে আবূ তালিব! আপনি কি আবদুল মুত্তালিবের দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন? রাসূলুল্লাহ (সা) বারবার ঐ কথার পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছিলেন।
শেষ পর্যন্ত আবূ তালিব বললেন যে, তিনি আবদুল মুত্তালিবের দীনের উপরই রয়েছেন আর এটাই ছিল তার শেষ কথা। তিনি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে অস্বীকার করলেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আপনার জন্য অবশ্যই ‘ইসতিগফার’ করতে থাকব, যতক্ষণ না আমাকে তা থেকে নিষেধ করা হয়,
এ প্রেক্ষাপটে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেন: (অর্থ) “আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী এবং মু’মিনদের জন্য সঙ্গত নয় যখন সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী।”(সূরা তাওবা: ১১৩) আর আল্লাহ তা‘আলা বিশেষভাবে আবূ তালিবের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা) কে লক্ষ করে ইরশাদ করেন: (অর্থ) (হে রাসূল!) “আপনি যাকে চাইবেন তাকে পথ দেখাতে পারবেন না। কিন্তু আল্লাহ পথ দেখান যাকে ইচ্ছা করেন। আর তিনিই সম্যক জ্ঞাত আছেন কাদের ভাগ্যে হিদায়াত আছে সে সম্পর্কে।
৪০) ইসহাক ইবনে ইবরাহীম ও আবদ ইবনে হুমায়দ রহ…যুহরীর সূত্রে এ সনদেই অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
৪১) মুহাম্মদ ইবনে আব্বাস ও ইবনে আবূ উমর রহ…আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর চাচা আবূ তালিবের অন্তিমকালে তাকে বলেছিলেন, আপনি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলুন, কিয়ামত দিবসে আমি আপনার জন্য এর সাক্ষ্য দিব। কিন্তু তিনি অস্বীকার করলেন।
৪২) মুহাম্মদ ইবনে হাতিম ইবনে মায়মূন রহ…আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর চাচাকে বললেন, আপনি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলুন, কিয়ামত দিবসে আপনার পক্ষে আমি এর সাক্ষ্য দেব। তিনি বললেন, কুরায়শ গোত্র এই বলে আমার নিন্দা করবে যে, আবূ তালিব ভীত হয়ে একথা বলেছেন এ আশংকা যদি না থাকত, তাহলে আমি ‘কালেমা তাওহীদ’ পাঠ করে তোমার চোখ জুড়াতাম। এ প্রেক্ষিতে আল্লাহ নাযিল করেন: (অর্থ) “আপনি যাকে চাইবেন পথ দেখাতে পারবেন না; কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ দেখান।”
(সহীহ মুসলিম শরীফ-৩৯-৪২)