সূরা-আল-ইমরান বাংলা অর্থ (আয়াত ২৪-৪০)

সুরা-আল-ইমরান
আয়াত-২০০

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু

ذَ‌ٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا لَن تَمَسَّنَا النَّارُ إِلَّا أَيَّامًا مَّعْدُودَاتٍ ۖ وَغَرَّهُمْ فِي دِينِهِم مَّا كَانُوا يَفْتَرُونَ

২৪। ইহা এইজন্য যে, তাহারা এরূপ বলে যে, আমাদিগকে কেবল নির্দিষ্ট অল্প কয় দিন জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করিবে। আর তাহাদিগকে ধোকায় ফেলিয়া রাখিয়াছে তাহাদের (ধর্ম সম্বন্ধে) তৈয়ারী মনগড়া কথাসমূহ।

فَكَيْفَ إِذَا جَمَعْنَاهُمْ لِيَوْمٍ لَّا رَيْبَ فِيهِ وَوُفِّيَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ

২৫। অনন্তর তাহাদের কি অবস্থা হইবে! যখন আমি তাহাদিগকে ঐ তারিখে সমবেত করিব, যাহাতে কোন সন্দেহ নাই, এবং পূর্ণ বিনিময় প্রাপ্ত হইবে প্রত্যেকে, যাহাকিছু সে করিয়াছিল, আর তাহাদের উপর যুলুম করা হইবে না।

قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاءُ وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَن تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَن تَشَاءُ ۖ بِيَدِكَ الْخَيْرُ ۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

২৬। আপনি এইরূপ বলুন,হে আল্লাহ্! সমস্ত রাজ্যের মালিক, আপনি রাজ্য যাহাকে ইচ্ছা প্রদান করেন এবং যাহা হইতে ইচ্ছা করেন রাজ্য ছিনাইয়া লন। আর যাহাকে ইচ্ছা আপনি বিজয়ী করেন, আর যাহাকে ইচ্ছা আপনি পরাভূত করেন। আপনারই অধিকারে রহিয়াছে সমস্ত কল্যাণ। নিশ্চয়, আপনি সর্ববিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতাবান।

تُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ ۖ وَتُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ ۖ وَتَرْزُقُ مَن تَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ

২৭। আপনি রাত্র (-এর অংশ) কে দিনের মধ্যে প্রবেশ করান এবং দিন (-এর অংশ) কে রাত্রির মধ্যে প্রবেশ করান। আর আপনি সজীবকে নির্জীব হইতে বাহির করেন, যেমন ডিম্ব হইতে বাচ্চা) আর নির্জীব বস্তুকে সজীব হইতে বাহির করেন। আর আপনি যাহাকে ইচ্ছা অপরিমিত রেযেক দান করেন।

শানে নুযুলঃ

১। ইহুদীরা মীমাংসাকার্যে তাওরাত অনুযায়ী আমল করিত না এবং নির্ভয়ে গুনাহের কাজ করিত। কেননা, তাহাদের পূর্ব-পুরুষগণ তাওরাতে মনগড়া ভাবে লিখিয়া গিয়াছে যে, ‘আমরা শত দিনের বেশী দোযখের শাস্তি ভোগ করিব না। আমাদের পূর্ব-পুরুষ হযরত ইয়াকুব, তাঁহার পিতা ও দাদা আমাদিগকে দোযখ হইতে মুক্ত করিয়া লইবেন।’ ইহারা উহাই বিশ্বাস করিত। আল্লাহ্ তা‘আলা এ সম্বন্ধে আয়াতটিতে বলিতেছেন। (মুঃকোঃ)
২। অর্থাৎ, আপনি গ্রীষ্মকালে রাত্রের অংশকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করাইয়া দিনকে বড় এবং রাত্রকে ছোট করেন, আর শীতকালে দিনের অংশকে রাত্রের মধ্যে প্রবেশ করাইয়া রাত্রি বড় এবংদিন ছোট করেন। আর আপনি নির্জীব পদার্থ হইতে সজীব পদার্থ যেমন-শৃক্র হইতে প্রাণী এবং বীজ হইতে উদ্ভিদ কিংবা মূর্খ ও কাফের হইতে ওলী ও মু’মিন পয়দা করিয়া থাকেন। আর সজীব পদার্থ হইতে নির্জীব পদার্থ যেমন, প্রাণী হইতে শুক্র ও পক্ষী হইতে ডিম এবং নেককার হইতে বদকার বাহির করেন। (মুঃকোঃ)

لَّا يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِن دُونِ الْمُؤْمِنِينَ ۖ وَمَن يَفْعَلْ ذَ‌ٰلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي شَيْءٍ إِلَّا أَن تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً ۗ وَيُحَذِّرُكُمُ اللَّهُ نَفْسَهُ ۗ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ

২৮। মুসলমানদের উচিত কাফেরদিগকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করা মুসলমানদিগকে (বন্ধুত্ব) অতিক্রম করিয়া, আর যে ব্যক্তি এইরূপ করিবে, সে ব্যক্তি আল্লার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখার কোন হিসাবে নহে। অবশ্য এমন অবস্থায় (বাহিৃক বন্ধুত্বের অনুমতি আছে) যখন তোমরা তাহাদিগ হইতে কোন প্রকার আশংকা কর, আর আল্লাহ্ তোমাদিগকে তাঁহার সত্ত্বার ভয় দেখাইতেছেন। আর আল্লাহ্রই নিকট ফিরিয়া যাইতে হইবে।

قُلْ إِن تُخْفُوا مَا فِي صُدُورِكُمْ أَوْ تُبْدُوهُ يَعْلَمْهُ اللَّهُ ۗ وَيَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

২৯। আপনি বলিয়া দিন, যদি তোমরা গোপন কর স্বীয় মনের বিষয়কে অথবা ইহা প্রকাশ কর আল্লাহ্ তাহা জানেন। আর তিনি তো সবকিছু জানেন,যাহাকিছু আসমান সমূহে আছে আর যাহাকিছু যমীনে আছে। আর আল্লাহ্ সর্ববিষয়োপরি ক্ষমতাও পূর্ণ রাখেন।

يَوْمَ تَجِدُ كُلُّ نَفْسٍ مَّا عَمِلَتْ مِنْ خَيْرٍ مُّحْضَرًا وَمَا عَمِلَتْ مِن سُوءٍ تَوَدُّ لَوْ أَنَّ بَيْنَهَا وَبَيْنَهُ أَمَدًا بَعِيدًا ۗ وَيُحَذِّرُكُمُ اللَّهُ نَفْسَهُ ۗ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ

৩০। যেদিন প্রত্যেকেই স্বীয় কৃত নেককাজসমূহ সম্মুখে উপস্থাপিত পাইবে এবং স্বীয় কৃত মন্দ কাজসমূহ (ও); (সেদিন) এই কামনা করিবে যে, কি চমৎকার হইতো! যদি এই ব্যক্তি এবং সেই দিনের মধ্যে সুদুর ব্যবধান থাকিত। আর আল্লাহ্ তোমাদিগকে স্বীয় সত্ত্বার ভয় দেখাইতেছেন, এবং আল্লাহ্ বান্দাদের প্রতি খুব দয়াশীল।

قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ

৩১। আপনি বলিয়া দিন, যদি তোমরা আল্লার সঙ্গে ভালোবাসা রাখ, তবে তোমরা আমায় অনুসরণ কর, আল্লাহ্ তোমাদিগকে ভালোবাসিবেন এবং তোমাদের যাবতীয় গুনাহ্ মা’ফ করিয়া দিবেন। আর আল্লাহ্ খুব ক্ষমাশীল বড় করুণাময়।

শানে নুযুলঃ আচার ব্যবহার তিন প্রকার–যথাঃ

১। বন্ধুত্বঃ কাফেরদের সহিত বন্ধুত্ব স্থাপন করা কোন অবস্থাতেই জায়েয নহে।
২। বাহিৃক সদ্ব্যবহারঃ ইহা তিন প্রকার যথাঃ (ক) প্রতিরোদের উদ্দেশ্যে (খ) সদ্ব্যবহারে কাফের মুসলমান হওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে, (গ) কাফের মেহ্মানের সম্মানার্থে বাহিৃক সদ্ব্যবহারের অনুমতি রহিয়াছে। এতদভিন্ন ব্যক্তিগত মান-মর্যাদা বা ধন-সম্পদ লাভের উদ্দেশ্যে কাফেরের সহিত সদ্ব্যবহার জায়েয নহে। অধিকন্তু ধর্ম বিষয়ে কোন প্রকার ক্ষতির আশংকা থাকিলে উপরোক্ত সদ্ব্যবহার হারাম।
৩। সাহায্য ও উপকার করাঃ হরবী দেশে অবস্থানকারী কাফের ব্যতীত অন্যান্য কাফেরদিগের সাহায্য ও উপকার করা জায়েয। (বঃকোঃ)

قُلْ أَطِيعُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ ۖ فَإِن تَوَلَّوْا فَإِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْكَافِرِينَ

৩২। আপনি বলিয়া দিন, তোমরা অনুসরণ কর আল্লাহ্ ও রাসুলের। অতঃপর যদি তাহারা ফিরিয়া যায়, তবে (শুনিয়া রাখুক) আল্লাহ্ তা‘আলা কাফিরদের সহিত ভালোবাসা রাখেন না।

إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَىٰ آدَمَ وَنُوحًا وَآلَ إِبْرَاهِيمَ وَآلَ عِمْرَانَ عَلَى الْعَالَمِينَ

৩৩। নিশ্চয়, আল্লাহ্ মনোনীত করিয়াছেন (নুবুওয়্যাতের জন্য) আদমকে, নূহকে এবং ইব্রাহীমের সন্তানগণকে ও এমরানের সন্তানদিগকে বিশ্বজগতের উপর।

ذُرِّيَّةً بَعْضُهَا مِن بَعْضٍ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

৩৪। তাঁহারা এক অন্যের সন্তান। আর আল্লাহ্ খুব শ্রবণকারী, মহা জ্ঞানী।

إِذْ قَالَتِ امْرَأَتُ عِمْرَانَ رَبِّ إِنِّي نَذَرْتُ لَكَ مَا فِي بَطْنِي مُحَرَّرًا فَتَقَبَّلْ مِنِّي ۖ إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

৩৫। যখন এমরান পত্নী নিবেদন করিল, হে আমার রব আমি মান্নত করিয়াছি আপনার জন্য এই সন্তান যাহা আমার উদরে রহিয়াছে, তাহাকে আযাদ রাখা হইবে। সুতরাং আপনি আমা হইতে গ্রহণ করুন। নিশ্চয়ই, আপনি খুব শ্রবণকারী, মহা জ্ঞানী।

فَلَمَّا وَضَعَتْهَا قَالَتْ رَبِّ إِنِّي وَضَعْتُهَا أُنثَىٰ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا وَضَعَتْ وَلَيْسَ الذَّكَرُ كَالْأُنثَىٰ ۖ وَإِنِّي سَمَّيْتُهَا مَرْيَمَ وَإِنِّي أُعِيذُهَا بِكَ وَذُرِّيَّتَهَا مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ

৩৬। অনন্তর যখন সে কন্যা প্রসব করিল, বলিল, হে আমার প্রভু! আমি তো কন্যা প্রসব করিয়াছি। অথচ আল্লাহ্ সমধিক জানেন যাহা সে প্রসব করিয়াছে। আর সেই ছেলে (যাহা তিনি কামনা করিয়াছিলেন) এই কন্যার সমকক্ষ নহে। আর আমি এই কন্যার নাম মারইয়াম রাখিলাম। আর আমি উহাকে ও উহার সন্তানগণকে আপনার আশ্রয়ে সমর্পণ করিতেছি বিতাড়িত শয়তান হইতে।

শানে নুযুলঃ

১। এমরানের পত্নীর নাম ‘হান্না’ ইনি হযরত মারইয়ামের মা ও ঈসা (আঃ) এর নানী। (মুঃকোঃ)
২। সেকালে পুত্র সন্তানকে পার্থিব কাজ হইতে মুক্ত রাখিয়া বাইতুল মুকাদ্দাসের জন্য মান্নত করা জায়েয ছিল, হান্নাও তাহার গর্ভস্থ শিশুকে তদ্রুপ মান্নত করিলেন, আশা ছিল, এই উছিলায় আল্লাহ্ পুত্র সন্তান দান করিবেন। (বঃকোঃ)
৩। মারইয়াম ভূমিষ্ঠ হইলে তাঁহার মা ধারনা করিলেন, তাঁহার মান্নত কবূল হয় নাই। কেননা, বাইতুল মুকাদ্দাসের খেদমতের জন্য মেয়ে-সন্তান কবুল করা হইত না। অবশেষে বিবি হান্না স্বপ্নযোগে অবগত হইলেন, মারইয়ামকে কবুল করা হইয়াছে। তাই তিনি মারইয়ামকে মসজিদে উপস্থিত করিয়া স্বপ্ন বৃত্তান্ত জানাইলেন। ইহাতে সকলে তাঁহাকে মসজিদে রাখিতে সম্মত হইলেন। তাঁহার খালু হযরত যাকারিয়া (আঃ) তাঁহাকে লালন-পালন করিতে লাগিলেন। (বঃকোঃ)

فَتَقَبَّلَهَا رَبُّهَا بِقَبُولٍ حَسَنٍ وَأَنبَتَهَا نَبَاتًا حَسَنًا وَكَفَّلَهَا زَكَرِيَّا ۖ كُلَّمَا دَخَلَ عَلَيْهَا زَكَرِيَّا الْمِحْرَابَ وَجَدَ عِندَهَا رِزْقًا ۖ قَالَ يَا مَرْيَمُ أَنَّىٰ لَكِ هَـٰذَا ۖ قَالَتْ هُوَ مِنْ عِندِ اللَّهِ ۖ إِنَّ اللَّهَ يَرْزُقُ مَن يَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ

৩৭। অনন্তর তাঁহাকে তাঁহার প্রতিপালক উত্তমরূপে গ্রহণ করিলেন। আর উত্তমরূপে তাঁহার পরিবর্ধন সমাধা করিলেন এবং যাকারিয়াকে তাঁহার অভিভাবক করিয়া দিলেন। যখনই যাকারিয়া উত্তম প্রকোষ্ঠে তাঁহার নিকট আসিতেন, তখন তাঁহার নিকট পানাহারের বস্তুসমূহ পাইতেন; এইরূপ বলিতেন, হে মারইয়াম! এই খাদ্যগুলি তোমার জন্য কোথা হইতে আসিয়াছে? তিনি বলিতেন, ইহা আল্লাহর নিকট হইতে আসিয়াছে। নিশ্চয়, আল্লাহ্ তা‘আলা যাহাকে ইচ্ছা অধিকার বিহনে রেযেক প্রদান করেন।

هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِيَّا رَبَّهُ ۖ قَالَ رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً ۖ إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ

৩৮। তখন যাকারিয়া প্রার্থনা করিলেন স্বীয় প্রভূর নিকট, বলিলেন, হে আমার রব! দান করুন আমাকে খাছ আপনার নিকট হইতে কোন উত্তম সন্তান; নিশ্চয়, আপনি খুব প্রার্থনা শ্রবণকারী।

فَنَادَتْهُ الْمَلَائِكَةُ وَهُوَ قَائِمٌ يُصَلِّي فِي الْمِحْرَابِ أَنَّ اللَّهَ يُبَشِّرُكَ بِيَحْيَىٰ مُصَدِّقًا بِكَلِمَةٍ مِّنَ اللَّهِ وَسَيِّدًا وَحَصُورًا وَنَبِيًّا مِّنَ الصَّالِحِينَ

৩৯। ইতঃপর তাঁহাকে ফেরেশতাগণ ডাকিয়া বলিলেন–যখন তিনি মেহেরাবে দাঁড়াইয়া নামায পড়িতেছিলেন– আল্লাহ্ আপনাকে সুসংবাদ দিতেছেন ইয়হইয়ার; তাঁহার অবস্থা এই হইবে যে, তিনি সমর্থনকারী হইবেন ‘কালেমাতুল্লাহর’ (নুবুওয়্যাতে ঈসার) এবং সরদার হইবেন এবং স্বীয় প্রবৃত্তিকে খুব দমনকারী হইবেন আর নবীও হইবেন এবং উচ্চস্তরের সুসভ্যও হইবেন।

قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ يَكُونُ لِي غُلَامٌ وَقَدْ بَلَغَنِيَ الْكِبَرُ وَامْرَأَتِي عَاقِرٌ ۖ قَالَ كَذَ‌ٰلِكَ اللَّهُ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ

৪০। যাকারিয়া আরয করিলেন, হে আমার রব! আমার পুত্র হইবে কি করিয়া? অথচ আমার বার্ধক্য উপস্থিত হইয়াছে আর আমার স্ত্রীও সন্তান প্রসবের যোগ্য রহে নাই। আল্লাহ্ বলিলেন, এই অবস্থাতেই পুত্র হইবে, কেননা, আল্লাহ্ যাহা চান করেন।

শানে নুযুলঃ

১। হযরত যাকারিয়া নিঃসন্তান ছিলেন। বার্ধক্যে সন্তান হওয়া নিয়ম-বিরুদ্ধ। তাই আল্লাহ্ তা‘আলার হুযুরে সন্তান প্রার্থনা করার সাহস করিতেন না কিন্তু মারইয়মের নিকট অ-মৌসুমী ফল আসিতে দেখিয়া তাঁহার আশা হইল, আমিও অসময়ে সন্তান লাভ করিতে পারি। অতএব, তিনি সন্তানের জন্য প্রার্থনা করিলেন। (মুঃকোঃ)
২। অর্থাৎ, হযরত ইয়াহইয়া ভূমিষ্ট হইয়া বলিবেন, হযরত ঈসা সত্য পয়গম্বর এবং তিনি পিতার মাধ্যস্থতা ব্যতীত শুধু আল্লাহর হুকুমেই সৃজিত হইয়াছেন। (মুঃকোঃ)
৩। অর্থাৎ, হযরত যাকারিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, হে প্রভূ! আমাকে পুনরায়যৌবন দান করিবেন, না এই বার্ধকোই সন্তান দান করিবেন? এরশাদ হইল, এই অবস্থায়ই পুত্র দিব। কেননা, আল্লাহ্ তা‘আলা যাহা চাহেন, করেন। (মুঃকোঃ)