আয়াত-২০০
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু
لَّقَدْ سَمِعَ اللَّهُ قَوْلَ الَّذِينَ قَالُوا إِنَّ اللَّهَ فَقِيرٌ وَنَحْنُ أَغْنِيَاءُ ۘ سَنَكْتُبُ مَا قَالُوا وَقَتْلَهُمُ الْأَنبِيَاءَ بِغَيْرِ حَقٍّ وَنَقُولُ ذُوقُوا عَذَابَ الْحَرِيقِ
১৮১। নিশ্চয়, আল্লাহ শ্রবণ করিয়াছেন ঐ সকল লোকের কথা যাহারা এইরূপ বলে –আল্লাহ দরিদ্র আর আমরা ধনবান। আমি তাহাদের উক্তি গুলোকে লিখিয়া রাখিব, এবং তাহাদেরও অন্যায়ভাবে নবীগণকে হত্যা করাকেও। আর আমি বলিব, স্বাদ গ্রহন কর আগুনের–আযাবের।
ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيكُمْ وَأَنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ
১৮২। ইহা ঐ কর্মসমূহের দরুন, যাহা তোমরা নিজ হস্তে সঞ্চয় করিয়াছিলে, আর ইহা সুপ্রমাণিত যে, আল্লাহ বান্দাদের প্রতি অত্যাচারী নহেন।
الَّذِينَ قَالُوا إِنَّ اللَّهَ عَهِدَ إِلَيْنَا أَلَّا نُؤْمِنَ لِرَسُولٍ حَتَّىٰ يَأْتِيَنَا بِقُرْبَانٍ تَأْكُلُهُ النَّارُ ۗ قُلْ قَدْ جَاءَكُمْ رُسُلٌ مِّن قَبْلِي بِالْبَيِّنَاتِ وَبِالَّذِي قُلْتُمْ فَلِمَ قَتَلْتُمُوهُمْ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
১৮৩। তাহারা এমন লোক যে–বলে, আল্লাহ আমাদিগকে আদেশ করিয়াছিলেন, যেন আমরা কোন নবীর প্রতি ঈমান না আনি, যে পর্যন্ত না আমাদের সম্মুখে আল্লাহর জন্য কুরবানী করার মু‘জেযা প্রকাশ করে, যাহাকে আমি অগ্নি গ্রাস করিয়া লয়। আপনি বলিয়া দিন, নিশ্চয়, আমার পূর্বে তোমাদের প্রতি বহু রাসূল বহু প্রমাণাদিসহ আসিয়াছিলেন এবং হুবুহু তোমাদের কথিত মু‘জেযা সহও, তবে কেন তাহাদিগকে হত্যা করিয়াছিলে? যদি তোমরা সত্যবাদী হইয়া থাক।
শানে নুযুলঃ
১) এই বেড়ি পরাইবার কথা বোখারী শরীফে উল্লেখ আছে যে হুযুর বলিয়াছেন, কেহ আল্লাহ প্রদত্ত মালের যাকাত না দিলে, কিয়ামত দিবসে তাহার বিষাক্ত সর্পের বেড়ি রূপে তাহার গলায় পরাইয়া দেওয়া হইবে। উক্ত সর্প তাহার মুখের উভয় চোয়াল চাপিয়া ধরিয়া বলিবে, আমি তোমার পার্থিব ধন সম্পদ।(বঃ কোঃ)
২) শানে নুযুলঃ ইবনে আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত আছে, ‘‘এমন ব্যক্তি কে আছে , যে আল্লাহ কে করযে হাসানা দিবে? ’’আয়াতটি নাযিল হইলে ইহুদীরা হুযুরের খেদমখে আসিয়া বলিল, হে মুহাম্মাদ! আপনার খোদা কি দরিদ্র হইয়া পড়িয়াছেন যে, বান্দার নিকট ভিক্ষা চাহিতেছেন? তখন আল্লাহ আয়াতটি নাযিল করেন। (লোঃ নুঃ)
৩) পূর্বকালে কোন কোন নবী (আঃ) এইরূপ মু’জেযাহ প্রদর্শন করিয়াছিলেন যে, কোন প্রাণী বা প্রাণীহীন বস্তু আল্লাহর নামে কোন ময়দানে বা পাহাড়ে রাখিয়াদিতেন, আকাশ ইহতে অগ্নি আসিয়া উহাকে গ্রাস করিয়া লইত। (বঃ কোঃ)
فَإِن كَذَّبُوكَ فَقَدْ كُذِّبَ رُسُلٌ مِّن قَبْلِكَ جَاءُوا بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ وَالْكِتَابِ الْمُنِيرِ
১৮৪। সুতরাং যদি আপনাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করে, তবে বহু পয়গম্বরকে –যাহারা আপনার পূর্বে অতিত হইয়াছেন –মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করা হইয়াছে; যাহারা আসিয়াছিলেন মু’জেযাসমূহ এবং ছহীফাসমূহ ও উজ্জল কিতাব লইয়া।
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۖ فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ۗ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ
১৮৫। প্রত্যক প্রাণ (ধারী) কেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করিতে হইবে। আর নিশ্চয়, তোমরা তোমাদের পূর্ব প্রতিদান কিয়ামত দিবসে পাইবে। অতএব, যাহাকে দোযখ হইতে রক্ষা করা হইল, এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হইল, ফলতঃ সে সফলকাম হইল; এবং পার্থিব জীবন তো কিছুই নহে প্রতারণার সামগ্রী ব্যতীত ।
لَتُبْلَوُنَّ فِي أَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ وَمِنَ الَّذِينَ أَشْرَكُوا أَذًى كَثِيرًا ۚ وَإِن تَصْبِرُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ ذَٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْأُمُورِ
১৮৬। অবশ্য ভবিষ্যতে তোমরা স্বীয় ধনসমূহে ও স্বীয় প্রাণ সমূহে আরও পরিক্ষিত হইবে। এবং ভবিষ্যতে আরও বহু বেদনাদায়ক কথা অবশ্য শুনিবে উহাদের নিকট হইতে যাহাদিগকে তোমাদের পূর্বে কিতাব প্রদত্ত হইয়াছে এবং উহাদের হইতে (ও) যাহারা মুশরেক; আর যদি তোমরা ধৈয্যধারন কর এবং পরহেয করিতে থাক, তবে (তোমাদের জন্য উত্তম কেননা,) ইহা তাকীদী নিদের্শাবলীর অন্তভূক্ত।
وَإِذْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَتُبَيِّنُنَّهُ لِلنَّاسِ وَلَا تَكْتُمُونَهُ فَنَبَذُوهُ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ وَاشْتَرَوْا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۖ فَبِئْسَ مَا يَشْتَرُونَ
১৮৭। আর যখন আল্লাহ তা’আলা আহলে কিতাবদের নিকট হইতে এই অঙ্গিকার লইলেন যে, ঐ কিতাব জনগনের সম্মুখে প্রকাশ করিয়া দিবে এবং ইহা গোপন করিবে না, অনন্তর তাহারা ইহাকে স্বীয় পশ্চাতে নিক্ষেপ করিল এবং ইহার পরিবর্তে নগণ্য বিনিময় গ্রহন করিল; সুতরাং ইহা নিকৃষ্ট বস্তু যাহা তাহারা গ্রহন করিতেছে।
শানে নুযুলঃ
১) মুসলমানরা মক্কায় নিজেদের লোকজন ও ধন সম্পদ রাখিয়া মদীনায় চলিয়া আসিলে মক্কার কাফেররা যুলুম পূর্বক তাহাদের সম্পত্তি কাড়িয়া লইত, কোন মুসলমানকে হাতে পাইলে যন্ত্রণা দিয়া মারিয়া ফেলিত। অতএব আল্লাহ বলিতেছেন, বিপদ আপদে অধীর না হইয়া ধৈয্য ধারন করিতেই তোমাদের জন্য মঙ্গল নিহিত রহিয়াছে। (মুঃ কোঃ)
২) আহলে কিতাবগণ যে সমস্ত বিষয় গোপন করিত তম্মধ্যে রাসূলুল্লাহ (দঃ) এর মর্যাদার বিবরণই সমধিক গুরত্বপূর্ণ ছিল। যেহেতু তাহাদের নিজেদেরই ঈমান আনয়নের ইচ্ছা ছিল না। কাজেই তাহারা উহা অন্যান্য লোক হইতেও গোপন করিত। (বঃ কোঃ)
لَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَفْرَحُونَ بِمَا أَتَوا وَّيُحِبُّونَ أَن يُحْمَدُوا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوا فَلَا تَحْسَبَنَّهُم بِمَفَازَةٍ مِّنَ الْعَذَابِ ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
১৮৮। যাহারা এইরূপ যে, স্বীয় (অসৎ) কর্মে আনন্দিত হয়, এবং যেই সৎ কাজ করে নাই তাহাতে প্রশংসিত হওয়ার বাসনা রাখে, সুতরাং এইরূপ লোক সম্বন্ধে কখনও ধারনা করিও না যে, তাহারা (দুনিয়ায়) বিশেষ রকমের আযাব হইতে পরিত্রান পাইবে, (কখনও নহে) বস্তুতঃ তাহাদের (আখিরাতে ও) যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হইবে।
وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
১৮৯। আর আল্লাহরই জন্য রহিয়াছে আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব; এবং আল্লাহ তা’আলা সর্ববিয়োপরী পূর্ণ ক্ষমতাবান।
إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ
১৯০। নিঃসন্দেহে আসমানসমূহ ও যমীনের সৃজনে এবং পর্যায় ক্রমে দিবা রাত্রি গমনাগমনে নিদর্শনসমূহ রহিয়াছে জ্ঞানবানদের জন্য।
الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىٰ جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَـٰذَا بَاطِلًا سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
১৯১। যাহাদের অবস্থা এইরূপ যে, তাহারা আল্লাহর যেকের করে দাঁড়াইয়াও, বসিয়াও, শয়ন করিয়াও, এবং আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টির ব্যাপারে চিন্তা করে। (বলে), হে আমাদের রব্ব! আপনি ইহাকে অনর্থক সৃষ্টি করেন নাই, আমরা আপনাকে (অনর্থক সৃষ্টি করা হইতে) পবিত্র মনে করি, সুতরাং আমাদিগকে জাহান্নামের আযাব হইকে রক্ষা করুন।
رَبَّنَا إِنَّكَ مَن تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهُ ۖ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ
১৯২। হে আমাদের রব! নিশ্চয় আপনি যাহাকে জাহান্নামে দাখিল করেন, তাহাকে বাস্তবেই লাঞ্ছিত করিয়া দিলেন; আর এইরূপ যালেমদের কোনও সাহায্যকারী নাই।
رَّبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِي لِلْإِيمَانِ أَنْ آمِنُوا بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا ۚ رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ
১৯৩। হে আমাদের রব! আমরা এক আহ্বানকারী (রাসূলুল্লাহ) এর (আহ্বান) শুনিয়াছি, তিনি ঈমান আনয়নের জন্য আহ্বান করিতেছেন যে, তোমরা স্বীয় রবের প্রতি ঈমান আন, সুতরাং আমরা ঈমান আনিলাম। হে আমাদের রব! অতএব, আমাদের গুণাহসমূহকে মাফ করিয়াদিন এবং ত্রুটিগুলোকেও আমাদিগ হইতে মোচন করিয়া দিন এবং আমাদিগের মৃত্যু নেককারদের সহিত করুন।
শানে নুযুলঃ
১) ইহুদী আলেমগণ ভুল মাসাআলা রচনা করিয়া জনসাধারন হইতে অর্থ গ্রহন করিত এবং পয়গম্বর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিচয় গোপন রাখিত।ইহাতে নিজেরা মনে মনে আনন্দিত হইত যে, আমাদের চালাকি কেহ টের পায় না। (মুঃ কোঃ)
২) ক্বোরাইশরা হুযুরের খেদমতে আসিয়া বলিল, আপনি ছাফা পর্বতে স্বর্ণে পরিণত করিয়া দিন, তাহা হইলে আমরা আপনার উপর ঈমান আনিব। তদুত্তরে আল্লাহ এই আয়াতটি নাযিল করেন। (লোঃ নুঃ)
رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدتَّنَا عَلَىٰ رُسُلِكَ وَلَا تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۗ إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيعَادَ
১৯৪। হে আমাদের রব! আর আমাদিগকে উহাও দান করুন যাহার প্রতিশ্রুতি আপনি স্বীয় পয়গম্বদের মাধ্যমে আমাদিগকে দিয়াছেন, আর কিয়ামত দিবসে আমাদেরকে লাঞ্ছিত করিবেন না। নিশ্চয়, আপনি ওয়াদার খেলাপ করেন না।
فَاسْتَجَابَ لَهُمْ رَبُّهُمْ أَنِّي لَا أُضِيعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنكُم مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ ۖ بَعْضُكُم مِّن بَعْضٍ ۖ فَالَّذِينَ هَاجَرُوا وَأُخْرِجُوا مِن دِيَارِهِمْ وَأُوذُوا فِي سَبِيلِي وَقَاتَلُوا وَقُتِلُوا لَأُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَلَأُدْخِلَنَّهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ثَوَابًا مِّنْ عِندِ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عِندَهُ حُسْنُ الثَّوَابِ
১৯৫। অনন্তর মঞ্জুর করিলেন তাহাদের প্রার্থনা তাহাদের পরওয়ারদেগার এই জন্য হইতে যে, আমি তোমাদের মধ্যে হইতে কোন আমলকারীর আমলকে বিফল করি না। চাই সেই পুরুষই হউক বা নারী, তোমরা একে অন্যের অংশ; সুতরাং যাহারা হিজরত করিয়াছে এবং নিজেদের ঘরবাড়ি হইতে বহিষ্কৃত হইয়াছে এবং আমার পথে নির্যাতিত হইয়াছে এবং জেহাদ করিয়াছে ও শহীদ হইয়াছে, নিশ্চয়, তাহাদের গুণাহসমূহ মাফ করিয়া দিব এবং নিশ্চয় আমি তাহাদিগকে এমন উদ্যানে (বেহেশতে)দাখিল করিব যাহার তলদেশে নহরসমূহ বহিতে থাকিবে। এই বিনিময় প্রাপ্ত হইবে আল্লাহরই তরফ হইতে; আর আল্লাহর নিকট উত্তম বিনিময় রহিয়াছে।
لَا يَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي الْبِلَادِ
১৯৬। (হে সত্যান্বেষশী!) তোমাকে যেন নগরসমূহে কাফেরদের গনাগমন প্রতারিত না করে।
مَتَاعٌ قَلِيلٌ ثُمَّ مَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ ۚ وَبِئْسَ الْمِهَادُ
১৯৭। মাত্র কয়েকদিন উপভোগ, অতঃপর তাহাদের বাসস্থান হইবে দোযখ,এবং ইহা অত্যন্ত নিকৃষ্ট বাসস্থান।
শানে নুযুল
১) অর্থাৎ, একই সঙ্গে আল্লাহর একত্ব এবং রাসূলের প্রেরিতত্বের প্রতি আমরা ঈমান আনিলাম (বঃ কোঃ)
২) অর্থাৎ, নেক আমলের সহিত আমাদের পার্থিব জীবনের আবসান হউক।(বঃ কোঃ)
৩) অর্থাৎ, যেমন কেহ কেহ প্রথমে পাপের শাস্তি ভোগ করিয়া পরে জান্নাতে প্রবেশ করিবে।আমাদিগকে তদ্রুপ লাঞ্ছিত না করিয়া প্রথমেই জান্নাতে দাখিল করুন। (বঃ কোঃ)
৪) হযরত বিবি উম্মেসালমা বলেন, আমি হুযুর (দঃ) কে জিজ্ঞাস করিলাম, ইয়া রসূলুল্লাহ! মুহাজির পুরুষদের সম্বন্ধে আল্লাহ অনেক স্থানেই প্রশংসা করিয়াছেন। কিন্তু মুহাজির নারীদের সম্বন্ধে কিছু বলেন নাই। আমরা কি হিযরতের কোন সওয়াব পাইব না? তখন আল্লাহ এই আয়াতটি নাযিল করেন। অর্থাৎ কোন আমলকারীর আমলই নষ্ট হইবে না। সে নারীই হউক আর পুরুষই হউক। (তইসীরুল বয়ান)
لَـٰكِنِ الَّذِينَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ لَهُمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا نُزُلًا مِّنْ عِندِ اللَّهِ ۗ وَمَا عِندَ اللَّهِ خَيْرٌ لِّلْأَبْرَارِ
১৯৮। কিন্তু যাহারা স্বীয় রব্বকে ভয় করে, তাহাদের জন্য উদ্যানসমূহ রহিয়াছে, যাহার নিম্নে নহরসমূহ বহিতে থাকিবে। তাহারা উহাতে অনন্তকাল থাকিবে, ইহা মেহমানী হইবে আল্লাহর তরফ হইতে; আর যাহা কিছু আল্লাহর নিকট রহিয়াছে উহা নেককারদের জন্য বহু গুনে উত্তম।
وَإِنَّ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ لَمَن يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْكُمْ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْهِمْ خَاشِعِينَ لِلَّهِ لَا يَشْتَرُونَ بِآيَاتِ اللَّهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۗ أُولَـٰئِكَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
১৯৯। আর নিশ্চয়, আহলে কিতাবদের মধ্যে কেহ কেহ অবশ্য এমনও আছে যাহারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং এই কিতাবের প্রতিও যাহা তোমাদের প্রতি প্রেরিত হইয়াছে এবং ঐ কিতাবের প্রতিও যাহা তাহাদের প্রতি প্রেরিত হইয়াছিল; এইরূপে যে, আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করে, আল্লাহ তা‘আলার আয়াত সমূহের পরিবর্তে তুচ্ছ বিনিময় গ্রহন করে না; এইরূপ লোকদের উত্তম বিনিময় মিলিবে তাহাদের প্রতিপালকের নিকট; নিঃসন্দেহে, আল্লাহ তা’আলা শীঘ্রই হিসাব করিয়া দিবেন।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا وَرَابِطُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
২০০। হে ঈমানদারগণ! স্বয়ং ধৈর্য্য অবলম্বন কর, ও জেহাদে ধৈর্য্য রাখ এবং জেহাদের জন্য প্রস্তত থাক। আর আল্লাহকে ভয় করিতে থাক, যেন তোমরা পূর্ণসফলকাম হও।
শানে নুযুলঃ
১) মক্কার কাফেরেরা স্বচ্ছল এবং মুসলমানগণ অভাবগ্রস্ত ছিলেন কাহারও কাহারও মনে কল্পনা উদয় হইল, মূর্তি পূজকেরা বেশ শান্তিতে আছে, পক্ষান্তরে আল্লাহর ফরমাবদার মুসলমানগণ দুঃখ কষ্টে দিন যাপন করিতেছে। ইহার সহস্য কি! অতএব তাহাদিগকে সান্তনা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আল্লাহ এই আয়াতটি নাযিল করিলেন। (তাইসীরুল বয়ান)
২) আনাস (রা) রেওয়ায়েত করিয়াছেন আবিসিনিয়ার বাদশাহ নাজ্জাশীর এন্তেকাল হইলে হুযুর (দঃ) সাহাবাগণকে তাহার জন্য এস্তেগফার করিতে বলিলেন। সাহাবাগণ বলিলেন আপনি সুদৃঢ় হাবশা দেশের একজন খৃষ্টান মৃতের জন্য এস্তেগফার করিতে বলিতেছেন! হুযুর বলিলেন সে একজন মুসলমান,তোমাদের ভাই। এতদ- সম্পর্কে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (হাদীস)